এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীকে অবসরের পর আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকা ইএফটিতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পলাতক কল্যাণট্রাস্ট সচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু বাহিনীকে আর ঘুষ দিতে হবে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান স্বাক্ষরিত এক ডকুমেন্টে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অবসর ও কল্যান সুবিধা দেয়ার তথ্য জানা গেছে । ৭ আগস্ট সচিব স্বাক্ষরিত ও ডকুমেন্টে এই ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করার কথা জানা গেছে। অক্টোবর মাস থেকে এমপিও শিক্ষকরা বেতন-ভাতাও পাবেন ইএফটিতে। তবে, সেটা মাউশি অধিদপ্তরের নয় অঞ্চলের নয়টি উপজেলা দিয়ে পাইলটিং শুরু হবে।
ইএফটিতে হলে ভোগান্তি শূন্যের কোটায় নেমে আসবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা।
জানা গেছে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের এক সভায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন ইএফটিতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ইএফটিতে এমপিওর টাকা দিতে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য সংগ্রহ করে অধিদপ্তর।
তবে সে বছরের জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে কর্মরত একজন অতিরিক্ত সচিব পদোন্নতি পেয়ে সচিব পদমর্যাদায় অন্য দায়িত্বে চলে যান। তারপরেই মূলত ইএফটিতে এমপিও শিক্ষকদের বেতন দেয়ার উদ্যোগ ঝুলে যায়। তারপর করোনার অভিঘাত। তবে সারা দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন পেতে উন্মুখ হয়ে আছেন।
বর্তমানে ত্রিশ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত সাধারণ হাইস্কুল-কলেজ ও মাদরাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিওর টাকা হাতে পেতে চার দশকের পুরনো পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। তিনটি অধিদপ্তর থেকে এমপিওর খবর জানতে শিক্ষকদের নির্ভর করতে হয় শিক্ষাবিষয়ক একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম ও শিক্ষাবিষয়ক একমাত্র প্রিন্ট জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তাসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও সরকারি ওয়েবসাইটের ওপর। এমপিওর চেক ছাড়ের খবর প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে অধিদপ্তরগুলো থেকে চিঠি পাঠানো হয় তথ্য অধিদপ্তর এবং পত্র-পত্রিকায়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ অবশ্যই ইএফটির মাধ্যমে সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেয়ার কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অর্থ মন্ত্রণালয় সব সরকারি লেনদেন ইএফটির মাধ্যমে করতে চায়। ইতোমধ্যে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ইএফটিতে পাঠানো শুরু হয়েছে। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিষয়টিও বাস্তবায়ন হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আইবাস প্লাস প্লাস (ibas++) একটি ইন্টারনেটভিত্তিক সফটওয্যার, যার মাধ্যমে সরকারের বাজেটপ্রণয়ন, বাজেট বাস্তবায়ন, যথা-বরাদ্দ বিভাজন, অর্থ অবমুক্তি, বাজেট পুনঃউপযোজন, অনলাইনে বিল দাখিল এবং তার বিপরীতে চেক বা ইএফটির মাধ্যমে টাকা দেয়া, রাজস্ব জমার হিসাবরক্ষণ, স্বয়ংক্রিয় ব্যাংক হিসাব সমন্বয় ইত্যাদি আর্থিক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করা হয়।