সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা নিয়ে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছেন ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রীরা।
রবিবার (৭ জুলাই) দুপুরে কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে অবস্থান নেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের অবরোধের ফলে আজিমপুর থেকে মিরপুর সড়ক অভিমুখের সব গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
অপরদিকে, এই একই দাবিতে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করে রেখেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। অবশ্য এরই মধ্যে আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে, ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে একটি মিছিল শুরু হয়। এটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে টিএসসি হয়ে শাহবাগ মোড়ে যেয়ে শেষ হয়। এখন তারা সেখানে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামছেন।