ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন এবং ইতিহাসের বিকৃতি অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না। ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের প্রমাণ মেলায় এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। সেই সঙ্গে ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
গতকাল রোববার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত ‘Historicizing 1971 Genocide: State versus Person (UPI 2009)’ শীর্ষক গ্রন্থে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের বিষয় উদঘাটনের জন্য গঠিত কমিটির সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। সভা মনে করে, গ্রন্থে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পরিবেশিত কতিপয় তথ্য অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও ইতিহাসের বিকৃতি। সভায় উল্লিখিত গ্রন্থে অসত্য তথ্য পরিবেশন ও ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়।
একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গ্রন্থের লেখক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এবং প্রকাশক ইউপিএলকে গ্রন্থটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সিন্ডিকেট।
এছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননাকারী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে জড়িত ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধও জানানো হয়েছে সভাতে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ অধ্যাপকের লেখা ওই বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত ৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির পরিচালক অধ্যাপক ফকরুল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।