ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের নিয়োগে আলাদা গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে অনশন - দৈনিকশিক্ষা

ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের নিয়োগে আলাদা গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে অনশন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নিয়োগে আলাদা গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে অনশন করছেন ইতোমধ্যে নিয়োগ পাওয়া ইনডেক্সধারী বা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। তারা বলছেন, বদলি চালু না থাকায় বেসরকারি শিক্ষকরা বিপাকে পড়েছেন। নতুন নিয়োগের সুযোগ থাকলেও তা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা নতুন নিয়োগ পেতে আলাদা গণবিজ্ঞপ্তির দাবি জানাচ্ছেন। 

তাদের দাবি, একটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ দিয়ে তারপর শূন্যপদের তথ্য নিয়ে বেকার নিবন্ধিতদের নিয়োগ দেয়া হোক। আর আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি না হলে আগের মতই শিক্ষক নিয়োগে আবেদনের সুযোগ দেয়া বা সরকারি শিক্ষকদের মত বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য বদলি ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান শিক্ষকরা।

শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। দুপুরে তাদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে  কর্মসূচিতে যোগদেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য, শিক্ষক নেতা ও নটরডেম কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক এ এন রাশেদা। 

অধ্যাপক এ এন রাশেদা বলেন, শিক্ষকরা নিগৃহিত। সবার অধিকার আছে পরিবারের সঙ্গে ভালোভাবে থাকার। কিন্তু আমলারা এসব জটিলতা সৃষ্টি করেছেন। শিক্ষকদের বেতন কাঠামো দেখলে বুঝতে পারবেন তারা কতোটা অবহেলিত। অন্যের সন্তানকে যারা শিক্ষা দেন তাদের অধিকার আছে ভালোভাবে পরিবার নিয়ে বাঁচার। তাদেরও অধিকার আছে নিজ পরিবারের সঙ্গে থাকার। শিক্ষকরা যে বেতন পান তাতে দূরে চাকরি পেলেও তারা পরিবার নিয়ে থাকতে পারেন না। এর সমাধান হওয়া উচিত।  

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষকরা বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের অন্যান্য চাকরির মত বদলির দাবি জানিয়ে ফল পাওয়া যায়নি। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ ক্ষমতা এনটিআরসিএর হাতে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত তিনটি গণবিজ্ঞপ্তি হয়েছে। দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তি থেকে নিবন্ধিত প্রার্থীরা দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ সুপারিশ পান। কিন্তু এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা শিক্ষক পদে নিয়োগে আবেদনের সুযোগ পান। তাই তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে বেশিরভাগ ইনডেক্সধারী শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন। কিন্তু তারা নিজ জেলা থেকে দূরে নিয়োগ পেয়ে পরিবার পরিজন ছাড়া বসবাস করছেন। 

শিক্ষকরা বলেন, আগামী চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ দেয়ার হবে না বলে আমরা জানতে পারছি। বদলি না থাকায় আমাদের নতুন নিয়োগের সুযোগ ছিলো। কিন্তু তাও বন্ধ হয়ে গেলো। আমরা চাই ইনডেক্সধারীদের জন্য আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি। ইনডেক্সধারীদের আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ দিলে শিক্ষক পদ শূন্য থাকবে না। প্রথমে ইনডেক্সধারীদের নতুন নিয়োগ দিয়ে পরে শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করে পরে বেকার নিবন্ধিতদের নিয়োগ দিতে হবে। 

তারা আরও বলেন, আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি না দেয়া হলে আমরা নতুন নিয়োগ পেতে আবেদনের সুযোগ বহাল চাই। তা না হলে আমরা চাই সরকারি শিক্ষকদের মত বদলি সুবিধা। আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। 

মানববন্ধনে আসা শিক্ষিকা শাহেলা শারমিন বেলা বলেন, নিজ জেলা পাবনা হলেও শিক্ষকতা করি ঝিনাইদহে। মাত্র ১২ হাজার ৭৫০ টাকা বেতনে বাসা ভাড়া করে থেকে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি বা বদলি সুবিধা চাই। আর তা না হলে আগের মতই আবেদনের সুযোগ চাই।  

মানববন্ধনে তন্ময় রায়, রফিকুল ইসলাম, দেবানন্দ বসুসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা অংশ নেন। 

প্রসঙ্গত, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরাসরি এনটিআরসিএর গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদনের সুযোগ পেতেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা না থাকায় এমপিও নীতিমালাগুলোতে তাদের জন্য এ সুযোগ রাখা হয়েছিলো। তাদের বদলির জন্য আলাদা নীতিমালা করার কথা বলা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু নিজ বাড়ি থেকে দূরের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা এমপিওভুক্ত বা ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের জন্য নতুন প্রতিষ্ঠানে নতুন করে নিয়োগ পাওয়ার বিধান রাখা হয়েছে এমপিও নীতিমালায়। সে অনুসারে ইনডেক্সধারী বা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সমপদে বা সমস্কেলের পদে নিয়োগের আবেদন করতে পারতেন। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে এমপিও নীতিমালার এ বিধান অনুসারে আবেদন করা হাজার হাজার শিক্ষককে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। কিন্তু এর ফলে অনেক নিবন্ধিত প্রার্থী নিয়োগ পাননি। আবার যেসব ইনডেক্সধারী শিক্ষক নতুন প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পেয়ে যোগদান করেছেন তাদের আগের পদগুলো খালিই থেকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের অনুসরণীয় পরিপত্রে কর্মরত শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদটি স্থগিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ পরিস্থিতিতে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা নতুন নিয়োগ পেতেও আবেদনের সুযোগ হারাচ্ছেন। 

 শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ - dainik shiksha চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ ঢামেকে একজনের মৃত্যু - dainik shiksha ঢামেকে একজনের মৃত্যু জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ - dainik shiksha জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ - dainik shiksha বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর - dainik shiksha শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের - dainik shiksha সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো - dainik shiksha যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.006525993347168