দৈনিকশিক্ষাডটকম, ইবি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এসব অভিযোগ তদন্তে পৃথক দুইটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক জামিনুর রহমান ও উপ-পরিচালক ইউসুফ আলী খান দুইটি অফিস আদেশেই স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
শেখ আবদুস সালামে বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটিতে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আবু তাহেরকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এ কমিটির সদস্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান ও সদস্য-সচিব একই বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসানের বিরুদ্ধে গঠিত কমিটিতে জেনারেল সার্ভিসেস, এস্টেট এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক জাফর আহমদ জাহাঙ্গীরকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটিতে সদস্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক জনাব মৌলি আজাদ ও সদস্য-সচিব একই বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়েছে, কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উল্লিখিত পত্রের সংযুক্তিতে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তপূর্বক যথা শীঘ্রই সম্ভব কমিশন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন দাখিল করবে। তদন্তের স্বার্থে কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন নথি ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবে এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
এদিকে ইউজিসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইউজিসির একটি প্রতিনিধি দল শীঘ্রই ক্যাম্পাসে আসবে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
অফিস আদেশগুলো তদন্ত কমিটির ব্যক্তিবর্গ, ইউজিসির দপ্তর ও ইবি রেজিস্ট্রার দফতর বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান। তিনি বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি পাইনি এখনো। অভিযোগ বা অনিয়ম পেলে ইউজিসি তদন্ত করতেই পারে।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্যকে ফোন করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, এর আগে ইবি উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের একাধিক নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও ফাঁস হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের ‘কণ্ঠসদৃশ্য’ নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক অডিও বিভিন্ন নামের ফেইসবুক আইডি থেকে প্রায় ১৫ টি অডিও ভাইরাল করা হয়। অডিওতে ভাইভার আগে চাকরির প্রশ্নফাঁস, নিয়োগ অর্থলেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য শোনা যায়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি প্রত্যাশীরা আন্দোলন ও ভিসির কার্যালয়ে তালা, ভিসির একান্ত সচিবকে অব্যাহতি এবং শিক্ষক সমিতি ও শাপলা ফোরাম সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা ও তদন্ত করে ব্যবস্থার দাবি করেন।
এ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসনের ঠিকাদারের সঙ্গে ‘অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত' আলাপন ফাঁস হয়। পহেলা মে ‘সাথী খাতুন’ নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে ৪৪ সেকেন্ডের একটি রেকর্ড সম্বলিত একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাস ভাইরাল হয়। অডিওতে রেজিস্ট্রারকে বলতে শোনা যায়, ‘এখন একটা চেক নিয়ে যান। দেওয়ার কথা ছিল ৬ লাখ এখন ৪ লাখ দেন। এক কাজ করেন ৫ লাখ দেন। আমার কথাও থাক আপনার কথাও থাক।’