ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা অন্য সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতোই মাসের শেষ দিন কিংবা বড়জোর পরবর্তী মাসের শুরুর দিন বেতন পেতেন। শেখ হাসিনার পতনের পর গত ১৫ আগস্ট পদ ছাড়েন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. মুহাম্মদ আবদুর রশীদ।
উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে উপ-উপাচার্য বা কোষাধ্যক্ষ কিংবা জ্যেষ্ঠ একজন অধ্যাপককে দিয়ে আর্থিক কাজকর্ম চালানোর সরকারি নির্দেশনা থাকলেও রোববার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির ২১১ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সব আর্থিক কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যালয় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় ওয়েস্ট ধানমন্ডি হাউজিংয়ের একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনের ভাড়াও পরিশোধ হয়নি।
উপাচার্যের পদত্যাগের পর থেকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এবং ট্রেজারার এস এম এহসান কবীর অফিস করছেন না। এ দু’জনের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন করেন। শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দেন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ। সর্বশেষ গত ১৫ আগস্ট উপাচার্যের পদত্যাগের দিন উপ-উপাচার্য অল্প সময়ের জন্য অফিসে গিয়ে কিছু কাগজপত্র নিয়ে বের হয়ে যান। এর পর আর এক দিনও অফিস করেননি তিনি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যেমন দেশের স্নাতক-ডিগ্রিওয়ালা কলেজগুলোর কারিকুলাম- পরীক্ষাসহ সব বিষয়ের দেখভাল করে, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ও তেমনি দেশের যেসব মাদ্রাসায় স্নাতক-স্নাতকোত্তর সমমানের ফাজিল-কামিল পড়ানো হয়, সেগুলোর তদাকরকারী প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, পরিচালক (অর্থ) বেতনের বিষয়টি চূড়ান্ত করে রেখেছেন। তবে কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য অফিস না করায় বেতনাদি দেয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদকে ফোন করা হলে তা রিসিভ না করে খুদে বার্তায় জানানো হয় তিনি অসুস্থ। ট্রেজারার এহসান কবীর বলেন, ‘উপ-উপাচার্য অসুস্থ শুনেছি। বেতনের ফাইল রেডি হয়েছে। স্যারের কাছে পাঠাতেও বলেছেন।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বিশ্ববিদ্যালয় অধিশাখা-২) নুমেরী জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব খুঁটিনাটি বিষয় মন্ত্রণালয় দেখে না। সরকারের নির্দেশনা রয়েছে, উপাচার্য না থাকলে বা কোনো কারণে অফিস করতে না পারলে উপ-উপাচার্য, এর পর ট্রেজারার, এর পরও কেউ না থাকলে একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকের মাধ্যমে আর্থিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হবে। সেখানে শুধু উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন, উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার তো রয়েছেন।’
এদিকে দ্রুত পরীক্ষা গ্রহণসহ ১২ দফা দাবিতে গতকাল রোববার ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে তারা রেজিস্ট্রার ড. কামরুল ইসলামের হাতে স্মারকলিপি জমা দেন।