প্রতি বছর ঈদে আকাশ পথের যাত্রীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে টিকিটের দাম। তবে এবার যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি টিকিটের দামের ওপরও বিশেষ ছাড় দেয়া হতে পারে বলে জানান দেশি বিমান সংস্থাগুলো।
ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে বাড়ে আকাশ পথের যাত্রী সংখ্যা। সাড়ে ৩ হাজার টাকার টিকিট কিনতে হয় ১২ থেকে ১৬ হাজারে। এয়ারলাইনসগুলো বলছে, চাহিদা আর সরবরাহে ঘাটতি থাকায় দাম বাড়ে টিকিটের। তবে এবার থাকছে বাড়তি ফ্লাইট ও অফার। তাই আগেভাগেই টিকিট কেনার তাগিদ খাত সংশ্লিষ্টদের।
পরিসংখ্যান বলছে, দুই ঈদের আগে ও পরে ৭ - ১০ দিন চাপ পড়ে এয়ার টিকিটে। ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে টিকিট স্বল্পতায় ভাড়া বেড়ে যায় ৩ গুণ। আর বিজনেস শ্রেণির ১৫ হাজার টাকার টিকিট কিনতে হয় ২০ হাজার টাকায়।
বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. শফিউল আলম বলেন, এই ঈদে যাত্রীদের কথা চিন্তা করে ৩৪ টিরও বেশি ফ্লাইট অতিরিক্ত দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কোনো কোনো রুটে ঈদ উপলক্ষে ডিসকাউন্ট বা ছাড় দেয়ার কথাও চিন্তা করা হচ্ছে।
ঈদ মৌসুমে গন্তব্য ভেদে সড়ক পথের ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টার যানজট যেখানে অস্বস্তি করে তোলে ঈদযাত্রা। বিপরীতে ঢাকা থেকে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছানো যায় দেশের যে কোনো রুটে। এতে উৎসবকেন্দ্রিক নিয়মিত যাত্রীর পাশাপাশি এ পথে চাপ বাড়ছে সড়ক পথ ব্যবহারী অনেক যাত্রীর। কিন্তু আরামদায়ক এ যাত্রা উৎসবকেন্দ্রিক অতিরিক্ত ভাড়ায় পরিণত হয় নাভিশ্বাসে। তাই ঈদের আগেই বিক্রি হয়ে যায় অধিকাংশ এয়ারলাইনের টিকিট।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। বাকি যে টিকিটগুলো আছে, ২০ রোজার আগেই সেগুলো বিক্রি হয়ে যাবে বলেও আশা করেন তিনি।
তবে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো বলছে ভিন্ন কথা। ট্যুর হাব ট্রাভেলের সিইও সুলতান মাহমুদ বলেন, এখনও চাপ কিছুটা কম। তবে ঈদের আগে আগে ক্রেতাদের চাপ বাড়বে। আর এজন্য সে সময় টিকিটের দামও বৃদ্ধি পায়।
বাণিজ্যিক সংস্থা হিসেবে সাপ্লাইয়ের চেয়ে চাহিদা বেশি থাকলে ভাড়া বাড়াবে এয়ারলাইন্সগুলো; এমন তিক্ত সত্যতার কথা জানিয়ে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আরও সচেতন হতে হবে যাত্রীদের।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল হক বলেন, যারা ঈদে বাড়ি ফেরেন, তারা আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখতে পারেন। তাহলে ঈদের মাসে এই চাপটা কম পড়বে। পাশাপাশি যাত্রীরাও এতে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন।
দেশে বিভিন্ন অঞ্চলের সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের কারণে দুয়েকটি রুটে যাত্রী সংখ্যা কমলেও অন্যান্য রুটে বেড়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো।