উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যৌথ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে গভর্নমেন্ট অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া। কার্যক্রমের মধ্যে দুই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যৌথ গবেষণামূলক প্রকল্প গ্রহণ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, যৌথ একাডেমিক প্রোগ্রাম এবং পিএইচডি ডিগ্রিসহ শিক্ষা ও গবেষণার অন্যান্য ক্ষেত্রগুলো অন্তর্ভুক্তকরণে একমত পোষণ করেছে ইউজিসি ও গভর্নমেন্ট অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছে দু’পক্ষ।
বৃহস্পতিবার সকালে ইউজিসির সেমিনার কক্ষে গভর্নমেন্ট অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ও ইউজিসির মধ্যে উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন বিষয়ক এক গোলটেবিল আলোচনায় যৌথ সহযোগিতার বিষয়গুলো উঠে এসেছে। গভর্নমেন্ট অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতি ও কলা, ক্রীড়া ও বিনোদনম, অভ্যন্তরীণ শিক্ষা এবং ঐতিহ্য বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ট্যাম্পলম্যানের পক্ষে ১১ সদস্যের অস্ট্রেলিয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর অমিত চাকমা।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. তানভীর হাসান, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া-প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসানসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইলস, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মনোনীত সিনিয়র ফ্যাকাল্টিরা।
ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বর্তমান বাস্তবতায় উচ্চশিক্ষা লাভে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা শুধু বিদেশি স্কলারশিপের ওপর নির্ভর করতে চায় না। বর্তমান সরকার বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ প্রবর্তন করেছে। তিনি ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন শিক্ষার্থীদের খরচের একটি অংশ স্কলারশিপ হিসেবে প্রদান করতে সম্মত আছে বলে ইউজিসি চেয়ারম্যান সভাকে অবহিত করেন।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর অমিত চাকমা বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যৌথভাবে কাজ করার এখনই উপযু্ক্ত সময়। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে দুই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যৌথ গবেষণা কার্যক্রম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, যৌথ একাডেমিক প্রোগ্রাম এবং পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে তিনি ইউজিসি’র সহযোগিতা কামনা করেন। প্রফেসর অমিত চাকমা যৌথ সহযোগিতামূলক পদেক্ষপ এগিয়ে নিতে তাঁর ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলেও সভাকে অবহিত করেন।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে অধ্যয়নরত আছে। দেশের উচ্চশিক্ষা খাতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৪ লাখেরও অধিক। এ বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা দেয়াই আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে, বিদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর যৌথ সহযোগিতামূলক প্রস্তাবকে এগিয়ে নিতে ইউজিসির পক্ষ থেকে সবরকম সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি অস্ট্রেলিয়ান প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেন।
অস্ট্রেলিয়ান ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশনের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া ।