উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরীক্ষা নিয়ে ভর্তির চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, এ পরীক্ষা কি হবে, কি করে হবে, কি পদ্ধতিতে হবে ও বছরে কয়বার হবে তা নির্ধারণে খুব শিগগিরই কমিটি গঠন করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এ কমিটি খুটিনাটি সব বিচার বিশ্লেষণ করে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সোমবার দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে একক পরীক্ষা নেয়া ও ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি বা এনটিএ গঠনের বিষয়ের করণীয় নির্ধারণের সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা আলোচনা করছি কি করে ভর্তি পরীক্ষাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করা যায়। উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত যারা পড়েন তাদের সবাই যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অংশ নিতে পারেন, এটা কিভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক করা যায়, কি করে শিক্ষার্থীদের এই যে নানান জায়গায় যেয়ে তাদের পরীক্ষা দিতে হতো, হয়রানি-এটা বন্ধ করা যায়, অভিভাবকদের জন্য এটা কি করে আরো ব্যয় সাশ্রয়ী করা যায়-এরকম বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই ভাবছিলাম। যে কারণে আমাদের বেশ কয়েকটি গুচ্ছতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি হচ্ছে। তখন তাদের দু-একটা সমস্যা নতুন করে দেখা দিয়েছে-সেটাকে আবার ঠিক করা। মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা দীর্ঘদিন ধরে গুচ্ছতে হচ্ছে। কৃষি গুচ্ছ সেখানে তিনবার ভর্তি পরীক্ষা হলো। অন্যান্যগুচ্ছতে ভর্তি পরীক্ষা দুবার হলো।
মন্ত্রী আরো বলেন, আগামী বছর থেকে একটি সমন্বিত পরীক্ষার মাধ্যমে, একটি মানে সমন্বিত একটি ভর্তি পরীক্ষা হবে, সেটি একবার হবে না দুইবার হবে, বছরে হয়তো দুবার হবে, কি হবে, কি করে হবে, কি পদ্ধতিতে হবে ও বছরে কয়বার হবে সে সমস্ত কিছু ঠিক করবার বিষয় রয়েছে। সারা বিশ্বে উন্নত দেশগুলোতে যেভাবে হয়, সেই রকম করে। এটা নতুন করে আমাদের উদ্ভাবনের কোনো বিষয় নেই। এটা বিভিন্ন জায়গায় আছে, বিভিন্ন জায়গায় চলছে, ভালোভাবে কাজ করছে। আমরা সেগুলো দেখে নিয়ে, আমাদের জন্য যেটি সবচেয়ে বেশি উপযোগী হবে, সবচেয়ে বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, যেটিতে একেবারেই কোনো হয়রানি থাকবে না, ব্যয় সাশ্রয়ী হবে সে সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে কিভাবে একটি সমন্বিত পরীক্ষায় যাওয়া যায় সেই একটি প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা আলাপ আলোচনা শুরু করেছি।
তিনি বলেন, ,খুব শিগগিরই ইউজিসি থেকে এ ব্যাপারে একটি কমিটি করে দেয়া হবে। যারা এর খুটিনাটি যা কিছু আছে তা যাচাই বাছাই করে এ কাজটিকে (সব বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরীক্ষায় ভর্তি) এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা একটি ভর্তি পরীক্ষার দিকে যাচ্ছি। এ সভাতে একটি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়ার ব্যাপারে সবার ইতিবাচক সাড়া ছিলো। সবাইকে নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সেজন্যই এ কমিটি। এ কমিটি সবাইকে নিয়েই কাজ করবে। কি পদ্ধতিতে কিভাবে এটি (সব বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরীক্ষায় ভর্তি) হবে সে বিষয়ে এ কমিটি কাজ করবে।
কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যেতে চাচ্ছে। এ বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী আরেো বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার পেছনে একটি বড় কারণ, শিক্ষার্থী অভিভাবকদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য তিনি অভিপ্রায় ব্যাক্ত করেছেন। আমাদের আইনেও তাঁর নির্দেশনা ও অভিপ্রায়ের জায়গা আছে। তার অভিপ্রায় ও আইন অনুযায়ী পরীক্ষাগুলো হচ্ছে। সবাই আশা করি আইনের ওপর শ্রদ্ধাশীল থেকে তারা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অংশ নেবে।
ইউজিসি ইতোমধ্যে জানিয়েছে, আগামী বছর (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে) থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে একক আওতাভুক্ত করে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পর্যায়ক্রমে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি বা এনটিএ গঠন করতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। আর গুচ্ছ পদ্ধতিতে এবার অর্থাৎ ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।