উপজেলা পরিষদের মুখ্য কর্মকর্তা নন ইউএনও, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ - দৈনিকশিক্ষা

উপজেলা পরিষদের মুখ্য কর্মকর্তা নন ইউএনও, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও আর্থিক শৃঙ্খলাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুখ্য কর্মকর্তা নন। উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারাকে অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া আদেশের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ তথ্য রয়েছে। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার এ রায় প্রকাশ করেন। 

প্রকাশিত রায়ে বলা হয়, জাতীয় সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে ইউএনওদের উপজেলা পরিষদের সব প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দেয়া হয়। ইউএনওদের সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের কাছে কোনো জবাবদিহি না রেখেই এ সংশোধনী করা হয়। আইনের এমন বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অসাংবিধানিক। তাই এ বিধান বাতিলযোগ্য। 

১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা ২০১১ সালে সংশোধনী আনা হয়। সংশোধনীত আইনের ৩৩ ধারায় বলা হয়েছিল, (ক) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। (খ) পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন এবং বিধিতে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করবেন।

এক রিটের ভিত্তিতে এই ৩৩ ধারা কেন বাতিল করা হবে না, এই মর্মে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ জানুয়ারি রুল জারি করেন আদালত। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ সেপ্টেম্বর পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ধারা ১৩ (ক) ১৩ (খ) ও ১৩ (গ) কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা জানতে চেয়ে আরেকটি বেঞ্চ রুল জারি করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ জুন উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা খর্ব করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ক্ষমতা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। একই বিষয়ে পৃথক তিনটি রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ২৯ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩৩ ধারা বাতিল করে রায় দেন।

২৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন- আইনের এমন বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অসাংবিধানিক। এর কারণ হিসেবে পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা জাতীয় সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের সব প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের কাছে দায়বদ্ধ না করে প্রশাসনকে (ইউএনওদের) দিয়েছে, যা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত পরিষদ এবং সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

অতএব উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা (যা ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের আইন নং ২১ অনুযায়ী সংশোধিত) সংবিধানের ৭(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে বাতিলযোগ্য। উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ এর ২৬ ধারা লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদের জায়গায় ইউএনও কর্তৃক তাদের চিঠিপত্রে উপজেলা প্রশাসন পরিভাষাটির ব্যবহার করা হয়। এতদ্বারা বৈধ কর্তৃত্ব ছাড়াই তা ঘোষণা করা হয়। তাই এর কোনো আইনি প্রভাব নেই।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারাকে অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায় গত ৫ এপ্রিল স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের আদালত।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029439926147461