নীলফামারীতে একই নামে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সন্ধান মিলেছে। কার্যক্রমও চলছে শুধু কাগজকলমে। দুুটি ভিন্ন ম্যানেজিং কমিটির পক্ষপাতিত্ব আর রশি টানাটানিতে বিঘ্নিত হচ্ছে পাঠদান। চলতি ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টিতে যোগদান করতে গিয়ে হয়রানির কবলে পড়তে হয়েছে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত একজন শিক্ষককে।
সরজমিনে জেলার জলঢাকা উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, গাবরোল পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে রয়েছে ভিন্ন দুটি বিদ্যালয়। বিদ্যালয় দুটির একটি ১৯৯৪ অপরটি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত হলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থী না থাকায় একটিতে ভেঙে পড়েছে টিনের চাল আর বাঁশের বেড়া। অপরটি হয়েছে গোচারণ ভূমি।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীবিহীন ভুতুড়ে গাবরোল পূর্বপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামীয় সাইনবোর্ড দুটি বিদ্যালয়ের সামনে ঝুলতে দেখা গেলেও ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে দুটোই করা হয়েছে জাতীয়করণ। একই নামে দুই বিদ্যালয়ের দুই পক্ষের রেশারেশিতে এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় একই নামে থাকা দুটি বিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম। ফলে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে কয়েকশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন। কেউ কেউ পায়ে হেঁটে ২ থেকে ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ভিন্ন বিদ্যালয়ে গেলেও শিক্ষা থেকে ঝরে পড়েছে ওই এলাকার অনেক শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত একজন শিক্ষককে পদায়নের ক্ষেত্রেও বিপাকে পড়েছেন কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ওই শিক্ষককে পদায়ন করেছেন উপজেলার ভিন্ন একটি বিদ্যালয়ে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, নীলফামারী সূত্রে জানা গেছে, জলঢাকা উপজেলার মোট ২৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গাবরোল-১ ও গাবরোল-২ নামে দুটি বিদ্যালয়ের কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু গেজেট হয়েছে গাবরোল পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন জানান, গেজেট হলে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলমান থাকবে। সে কারণে ২০২৩ এ সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত একজন শিক্ষককে গাবরোল পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়ন করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা সংশোধন করে উপজেলার ভিন্ন একটি বিদ্যালয়ে পদায়ন করা হয়েছে।
জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ময়নুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে মামলা মোকদ্দমার কথাও আমি শুনেছি। কিন্তু কোনো কাগজপত্র আমার দপ্তরে না থাকায় আমি বিশদভাবে কিছু বলতে পারছি না।
দুপক্ষের রেশারেশি বন্ধ করে অন্তত একটি বিদ্যালয়কে মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের উপযোগী করে তুলে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালুকরণের দাবি করছেন স্থানীয়রা।