দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে এক সময় মানুষ একবেলা খাওয়ারের আশা করতো। এখন আল্লাহর রহমতে চার বেলা খাবার খায়। দেশের মানুষ এখন ভাত নয়, দুধ, ডিম পেঁয়াজ আর পাঙ্গাস মাছের অভাব বোধ করে। মানুষের খাবারের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার পাশাপাশি উৎপাদনও বেড়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবনে শুরু হওয়া সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পনের বছর আগে ভাতের হাহাকার ছিল। ভিক্ষুকরা তখন ভাতের ফেন চাইতো। এখন তা নেই। কৃষিতে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছি। বাংলাদেশে কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। এ কারণে এক সময় শীতকালে লাউ খাওয়ার চিন্তা করা হতো। কিন্তু এখন সারা বছর লাউ পাওয়া যায়। কৃষিতে আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি। পণ্যের দাম কমালে কৃষক দাম পায়না। তবে হ্যাঁ, সীমিত বেতনের লোকজনের জন্য কষ্ট হচ্ছে। মজুতদারি থেকে বাজার রক্ষা করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আগেও ছিল, এখনো চলমান আছে। পণ্য মজুতের সাথে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা জড়িত রয়েছে। পণ্য মজুত করে যারা কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে দাম বাড়ায় তাদের গণধোলাই দেওয়া উচিত।’
জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণের পর শেখ হাসিনার এটিই প্রথম সংবাদ সম্মেলন।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের প্রতি যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ এবং স্যাংশন ও পাল্টা স্যাংশন বিশ্বের কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। এগুলো বন্ধ করার জন্য আমি বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানি যান। তিনি দেশে ফিরে আসেন ১৯ ফেব্রুয়ারি। মিউনিখে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দেয়া ছাড়াও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষীয় বৈঠক করেন।
তাদের মধ্যে ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন।
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের সভাপতির আমন্ত্রণে সেখানে যান প্রধানমন্ত্রী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর দেশের বাইরে এটিই তার প্রথম সরকারি সফর। জার্মানিতে অবস্থানকালে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা। এ সফরে জার্মানিতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি নাগরিক সংবর্ধনায়ও অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।