নাম তার মিস্টার। পৃথক দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। একটিতে তিনি ‘মো. মিস্টার’ অন্যটিতে ‘মো. মিস্টার আলী’। এর মধ্যে একটি ব্যবহার করে বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করছেন। অন্যটির তথ্য অনুযায়ী তিনি এখন মৃত। এ ছাড়া ভোটার তালিকায়ও তার নাম উঠানো হয়েছে দুবার।
জানা গেছে, উভয় জাতীয় পরিচয়পত্রে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা একই রয়েছে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র, পিন, ফরম ও ভোটারের ক্ষেত্রে তিনি ব্যবহার করেছেন ভিন্ন নম্বর। বাবা, মা ও স্ত্রীর নামে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। মিস্টার নামে ওই ব্যক্তি জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের আলীরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বর্তমান কর্মস্থল ইসলামপুর উপজেলার মোশাররফগঞ্জ রেলস্টেশন।
বকশীগঞ্জ নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আলীরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মিস্টার। মো. মিস্টার নামে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১৯০০৭১৫৯৩৭, পিন নম্বর ১৯৭২৩৯১০৭১১৩৬৬৯৭৩, ফরম নম্বর ১৩৬৬৯৭৩, জন্ম তারিখ ০৩.০৫.১৯৭২ ইং, বগারচর ইউনিয়নের ভোটার নম্বর ৩৯০০১৩৩৬৬৯৭৩। শিক্ষাগত যোগ্যতা- নিরক্ষর। বাবার নাম মো. আসাদুল্লা, মায়ের নাম মোছা. মছেনা, স্ত্রীর নাম মোছা. বাছিকুল।
অপরদিকে মো. মিস্টারের সঙ্গে ‘আলী’ যোগ করে মো. মিস্টার আলী নাম ব্যবহার করে আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করছেন। মো. মিস্টার আলী নাম ব্যবহার করে যে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করছেন তার নম্বর ২৩৯০৬৮২৩২২, পিন নম্বর ১৯৮৬৩৯১০৭১১০০০০৫৪, ফরম নম্বর ৩১৭১৭১৬১, বগারচর ইউনিয়নের ভোটার নম্বর ৩৯০০১৩০০০২৯৪, শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখানো হয়েছে ৩য় শ্রেণি। জন্ম তারিখ ২৪.০৪.১৯৮৬ ইং।
১৯০০৭১৫৯৩৭ নম্বরের জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবার নাম ব্যবহার করেছেন মো. আসাদুল্লা, মায়ের নাম মোছা. মছেনা, স্ত্রীর নাম বাছিকুল। ২৩৯০৬৮২৩২২ নম্বরের জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবার নাম মো. আসাদুল্লার পরিবর্তে মো. আসাদুল্লাহ, মায়ের নাম মোছা. মছেনার সঙ্গে বেগম যুক্ত করেছেন, স্ত্রীর নাম বাছিকুলের পরিবর্তে বাছিফুল ব্যবহার করেছেন।
এ ব্যাপারে মো. মিস্টার আলী বলেন, আমি বর্তমানে মো. মিস্টার আলী নামে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে রেলওয়ের লাইনম্যান পদে চাকরি করছি। মো. মিস্টার নামের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করি না।
বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম প্রামাণিক বলেন, মিস্টারকে আমি চিনি। তিনি রেলওয়েতে চাকরি করেন। তবে দুটি এনআইডি বা দুবার ভোটার হওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই।
এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম জানান, মিস্টারের পরিবারের লোকজন ও ভোটার তালিকা প্রণয়ন কাজে নিয়োজিতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯০০৭১৫৯৩৭ নম্বরের জাতীয় পরিচয়পত্রধারী মো. মিস্টার মারা গেছেন বলে জানানো হয়েছে। তাই ওই নম্বরের জাতীয় পরিচয়পত্রধারী মো. মিস্টারের নাম ভোটার তালিকা থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। পরে প্রতারণা করে মো. মিস্টার আলী নাম ব্যবহার করে নতুন করে ভোটার তালিকায় নিজ নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এটা একক কারও কর্মের ফল নয়। এ ঘটনার সঙ্গে একাধিক লোক জড়িত। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।