এদেশের মানুষ শিক্ষিত হোক বিএনপি-জামায়াত সরকার কখনো তা চায়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১৬ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর 'অধ্যক্ষ সম্মিলন ও বৃত্তি প্রদান' অনুষ্ঠানে এ বক্তব্য দেন তিনি।
'অধ্যক্ষ সম্মিলন ও বৃত্তি প্রদান' অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের আগে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে অস্ত্রের ঝনঝনানী ও বোমাবাজি ছিল; বর্তমানে সেই পরিস্থিতি আজ আর নেই। আওয়ামী লীগ সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছে।
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর শিক্ষাসহ দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়ে যায়। সামরিক শাসকরা অস্ত্র তুলে দেয় মেধাবীদের হাতে, তাদের অবৈধ ক্ষমতা বৈধ করার শক্তি হিসেবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের। আমরা ক্ষমতায় আসার আগেও অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিলো ক্যাম্পাসে। এখন আর নেই।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী হত্যা এরকম অবস্থা দেখতে হয়েছে এ কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক এটা বিএনপি-জামায়াত কখনোই চায়নি। মানুষকে পদদলিত করে রাখা, অন্ধকারে রাখা, শোষণ করা আর নিজেরা অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়া এটাই বিএনপির চেষ্টা। আমরা চাই দেশ আরো এগিয়ে যাক। শুধু নৌকায় ভোট দিয়েছে বলে ৬ বছরের শিশু থেকে কেউই বাদ যায়নি বিএনপি-জামায়াতের নিগ্রহ থেকে উল্লেখ করেন তিনি।
১/১১ এর সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমাকেই আগে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু আমি আমার আত্মবিশ্বাস হারাইনি। তখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন, গণসাক্ষর পাঠানো হয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে। আন্তর্জাতিক চাপও তৈরি হয়। তারা বাধ্য হয়েছিল নির্বাচন দিতে। আত্মবিশ্বাস ছিলো দেশের মানুষের ওপর-নানা প্রলোভন দেয়া হয় আমাকে। নির্বাচন করবেন না, আপনাকে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় রাখা হবে এমন প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলাম। বলেছিলাম আমাকে এসব লোভ দেখিয়ে লাভ নেই। আমি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি বেলে জানান তিনি।
সুনির্দিষ্ট সময়ে আমরা দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে পেরেছি, আমরা নির্বাচনী ওয়াদা রক্ষা করেছি-এ কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের আগে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশকে যে বদলে দিতে চেয়েছিলাম, সেটা করতে পেরেছি। শুধু শিক্ষা নয়, সার্বিকভাবে দেশকে উন্নত করতে পেরেছি। যার কারণে দেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, পরনির্ভরশীলতা থেকে আত্মমর্যাদাশীল হতে হবে। পানি-বিদ্যুতের ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। অনেক ঝড় ঝাপটা থাকলেও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত ও স্থিতিশীল সরকার আছে বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নীত করতে চাই। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে 'যতক্ষণ শ্বাস আছে ততক্ষণ আঁশ' কাজ করে যাবো।