দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: জাতীয় প্রতিরক্ষা শিক্ষা আইনের সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পরমাণু শক্তিধর চীন। মূলত প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সবার জন্য সার্বিকভাবে প্রতিরক্ষাবিষয়ক শিক্ষার উন্নয়ন করাই এ সংস্কারের অন্যতম উদ্দেশ্য। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, এমনকি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতেও সামরিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে বেইজিং প্রশাসন।
চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস গেল সপ্তাহে জাতীয় প্রতিরক্ষা শিক্ষা আইনের সংস্কারগুলো পর্যালোচনা করতে শুরু করেছে। মে মাসের শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবিত সংস্কার বিষয়ে দেশের সাধারণ জনগণ তাদের মতামত জানাতে পারবে। তবে বৃহত্তর পরিসরে এটি নিয়ে বিতর্ক আয়োজনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
বলা হচ্ছে, এই আইনের আগের সংস্করণটি অতটা কঠোর বা স্পষ্ট ছিল না। তবে প্রস্তাবিত সংস্কারে বলা হয়েছে, হাইস্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই আইনের আওতায় জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরাও সামরিক প্রশিক্ষণ পেতে পারেন।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে জানানো হয়, এই সংস্কারগুলো সমাজের সকল স্তরে “জাতীয় নিরাপত্তা সচেতনতা” বাড়াতে ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে “বিভিন্ন নতুন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের” সঙ্গে মানিয়ে নিতে সহায়তা করবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় নিরাপত্তা সচেতনতার ওপর বাড়তি জোর দেওয়ার বিষয়টিকে চীনের ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী অনুভূতিকে আরও উসকে দিতে পারে এবং বহির্বিশ্বের বিরুদ্ধে বিরূপ বা আক্রমণাত্মক মনোভাব তৈরি করতে পারে। তবে এই আইনের ফলে আরও বেশি সংখ্যক চীনা তরুণ সামরিক বাহিনীতে যোগদানে করতে উৎসাহিত হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। চীনের জাতীয় নিরাপত্তা শিক্ষা আইন ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে পাস হয় এবং সর্বশেষ ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এর সংস্কার হয়।
গত কয়েক বছর ধরে মার্কিন কর্মকর্তারা বারবার বলে আসছেন যে- ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তাইওয়ান আক্রমণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে চায় চীন। দেশটির দাবি গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ান দ্বীপপুঞ্জ মূলত চীনের মূল ভূখণ্ডেরই একটি অংশ। বেইজিং বলছে, প্রায় আড়াই কোটি জনসংখ্যার দ্বীপের জন্য চীনের সঙ্গে একীকরণই একমাত্র বিকল্প এবং প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে তা ঘটানো হবে।