এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - দৈনিকশিক্ষা

এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনির প্রভাব ও ক্ষমতা ব্যবহার করে দেশজুড়ে শিক্ষা বিভাগে ভয়াল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন তার ভাই ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু। নিজ জেলা চাঁদপুরকেও এই সিন্ডিকেট কলুষিত করেছে। তাদের দুর্নীতির বিস্তার ঘটে জেলার নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।  চক্রটির নজর ছিল অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি করাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মে শতকোটি টাকার শিক্ষা-বাণিজ্যে।

জানা যায়, ডা. দীপু মনি তার নির্বাচনি এলাকায় নিজের সিন্ডিকেটের বাইরে কাউকে, এমনকি দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদেরও মূল্যায়ন করতেন না। ক্ষমতার দাপটে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ফলে ফ্রি-স্টাইলে চালিয়েছেন জেলার সব কর্মকাণ্ড।

দলের একাধিক ত্যাগী নেতার ভাষ্য,  চাঁদপুর-৩ তথা সদর ও হাইমচর উপজেলার উন্নয়ন, জনপ্রতিনিধি নির্বাচন-সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন দীপু মনি এবং তার ভাই ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু। ক্ষমতার অপব্যবহার তাকে আরও জনবিচ্ছিন্ন করে দেয়। কিন্তু তিনি ও তার ভাই এসবকে তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন দেদার। দীপু মনির নির্বাচনি এলাকায় বেশি দুর্নীতির জাল বিস্তার ঘটে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব থাকাকালীন। ওই সময়ে চাঁদপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে শতকোটি টাকার শিক্ষা-বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। নানান কারণে এ দুর্নীতির তথ্য তখন প্রকাশ করা যায়নি। দীপু মনি আটকের পর তার এবং তার সিন্ডিকেটের ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুস-দুর্নীতির নানা তথ্য বেরিয়ে আসছে। অনেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছে। 

ভাই টিপুর নেতৃত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একচ্ছত্র সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়। এ চক্রে চাঁদপুর পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার ছিলেন সহযাত্রী। তার দ্বারস্থ হতে সারা দেশের স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা চাঁদপুরে প্রায়ই চলে আসতেন। এমনকি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান, শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি থেকে শুরু করে শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও আসতেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মশিউর রহমান ছিলেন এই ঘুস বাণিজ্যের হোতাদের অন্যতম।

চাঁদপুর জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, চাঁদপুর-হাইমচরেই ১১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে স্কুল ৫৬টি, কলেজ ৪২টি এবং মাদ্রাসা ১১টি। মন্ত্রীর ভাই টিপু চাঁদপুর ও হাইমচর এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার নামে কমিশন নেন। একই সঙ্গে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুস নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও চতুর্থ শ্রেণির পদেও টিপুর সম্মত্তি ছাড়া নিয়োগের সুযোগ ছিল না। দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালীন চাঁদপুরে ৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৩৪২ জন শিক্ষক এবং ১৫৯ জন কর্মচারীকে এমপিওভুক্তি করা হয়। ভুক্তভোগীরা জানান, এমপিওভুক্তিতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ এবং প্রতি শিক্ষককে ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা করে দিতে বাধ্য করা হয়। এভাবে শতকোটি টাকার শিক্ষা-বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে চক্রের বিরুদ্ধে। 

দীপু মনি গ্রেফতারের পর রিমান্ডে অনেক তথ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এখন তার ভাই টিপুর ফোন নম্বর বন্ধ। তিনি দেশে আছেন কি না, তাও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদারও পলাতক রয়েছেন। ফলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, শুধু শিক্ষা খাতে নয়, দেশের প্রতিটি সেক্টর দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল। চাঁদপুরে দীপু মনির ভাই টিপু এবং হাইব্রিড আওয়ামী লীগের কতিপয় ব্যক্তি এসব দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করত। এদেশে এ দুর্নীতিবাজ চক্রের বিচার করতে হবে।

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী আবাসিক হোটেলে শিক্ষার্থীদের অভিযান, হামলা - dainik shiksha আবাসিক হোটেলে শিক্ষার্থীদের অভিযান, হামলা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063378810882568