পাঁচ লক্ষাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সুখবর। তারা ৫ শতাংশ আর্র্থিক প্রণোদনা পেতে যাচ্ছেন। সরকারি চাকুরেদের পাশাপাশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক এবং পেনশনভোগীদেরও জুলাই মাস থেকে এই প্রণোদনার অর্থ প্রদান করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসের শুরুতে জারি করা হবে বলে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন। তবে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো খবর নেই।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী শুক্রবার রাতে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় একমত যে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদেরও ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিতে হবে। না দেয়া বা দেরি করে দেয়া ভুল হবে। সেমতে, অর্থ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে। অতীতের মতোই রাজপথে কোনো আন্দোলন ছাড়াই ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাওয়া যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছি। এই প্রণোদনার ভেতরে অবসরভোগী (পেনশনার) ও শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা সুপারিশ করতে যাচ্ছি। এখন আর্থিক বিষয়গুলো নিয়ে পর্যালোচনা করছি। এ মাসের শেষ সপ্তাহে একটি সার-সংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রণোদনা বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন এ মাসের শেষে বা আগামী মাসের শুরুতে জারি করা হবে। তবে প্রজ্ঞাপন যখনই জারি করা হোক না কেন, প্রণোদনা ৫ শতাংশ অর্থ সরকারি চাকুরে, অবসরভোগী ও শিক্ষকরা জুলাই মাসের বেতনের সাথেই পাবেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বক্তব্য দেয়ার সময় সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ নতুন করে প্রণোদনা দেয়ার কথা ঘোষণা করেন।
সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি, শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করায় ৫ শতাংশ প্রণোদনায় দেয়ায় সরকারের বার্ষিক অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এই চলতি অর্থ বাজেট থেকে প্রদান করা হবে।
জানা গেছে, দেশে বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। আরো আছে কয়েক হাজার পেনশনভোগী সরকারের সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। অন্য দিকে, দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ৩০ হাজারের বেশে। এগুলোয় শিক্ষক-কর্মচারী আছেন পাঁচ লাখের বেশি। সরকারি চাকুরেদের মতো তারাও বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, খণ্ডিত ঈদ উৎসব ভাতা এবং বৈশাখী ভাতা পেয়ে থাকে।
অবসরভোগীরা পেনশনের পাশাপাশি, দুই ঈদে ভাতা, বৈশাখী ভাতা, চিকিৎসা ভাতা পেয়ে আসছেন। এর আগে ২০১৮ সালে ৮ অক্টোবর শতভাগ পেনশন সমপর্ণকারীদের পেনশন ১৫ বছরে পুনঃস্থাপনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, যারা তাদের শতভাগ পেনশন সরকারের কাছে সমর্পন (বিক্রি) করেছেন তাদের অবসরকালীন মেয়াদ ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আবার পেনশনের আওতায় ফিরে আসবেন। জানা গেছে, এদের সংখ্যা বর্তমানে ১০ হাজারের নিচে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের। ২০১৫ সালে মূল্যস্ফীতির হার গড়ে ৫ শতাংশ ছিল বলেই ইনক্রিমেন্ট একই হারে বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছিল।