হবিগঞ্জের মাধবপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনে দেড় যুগের বেশি সময় ধরে ভাড়ায় চলছে পৌরসভা পরিচালিত একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল। এমপিওভুক্ত এ হাইস্কুলে এতদিন ধরে কিন্ডারগার্টেন স্কুল চলায় স্থানীয়রা নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন। পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, আমরাই স্থান সংকটে রয়েছি। আমাদের ভবন মুক্ত করে দেওয়া হোক।
জানা গেছে, মাধবপুর পৌরসভা নিজস্ব উদ্যোগে ২০০০ সালে ফুলকলি কিন্ডারগার্টেনটি প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠার পর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন ভবনে শিক্ষাদান কার্যক্রম চলছিল। ২০০৪ সালে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি নবনির্মিত দ্বিতল ভবনে কিন্ডারগার্টেনটি নতুন করে কার্যক্রম শুরু করে।
সূত্র জানায়, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে দ্বিতল ভবনটি ফুলকলি কিন্ডারগার্টেন স্কুলটি পরিচালনার জন্য ভাড়া দেয়। শুরুতে মাসিক ভাড়ার পরিমাণ কত ছিল জানাতে না পারলেও বর্তমানে ভবনটির মাসিক ভাড়া ৭ হাজার টাকা বলে জানিয়েছেন ফুলকলির বর্তমান প্রধান শিক্ষক সাইফুল হক মির্জা।
পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম সাইফুল ইসলামও মাসিক ভাড়া ৭ হাজার টাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ফুলকলি কিন্ডারগার্টেন যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ভাড়ার টাকা দিয়ে সেই বিল শোধ করাই সম্ভব হয় না। অনেকদিন ধরে ঠিকমতো ভাড়াও পরিশোধ করছে না তারা। তবে কত মসের ভাড়া বকেয়া সে বিষয়ে জানাতে পারেননি তিনি।
প্রধান শিক্ষক সাইফুল আরও বলেন, ফুলকলি কিন্ডারগার্টেনে বর্তমানে ৬০০ ছাত্রছাত্রী অধ্যয়ন করছে। অপরদিকে, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৭০০ শিক্ষার্থী।
তিনি আরও জানান, হাইস্কুলের নিজেদেরই স্থান সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় ভবনটি তাদের দরকার। এজন্য এর আগে দুইবার ভবন ছাড়ার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষে ফুলকলি কর্তৃপক্ষকে নোটিস দেওয়া হলেও তারা বিষয়টিতে কর্ণপাত করছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কীভাবে ভাড়া দিয়েছে সে বিষয়ে তার জানা নেই। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল্লাহ জানান, ভবন ভাড়া দেওয়ার কোনো এখতিয়ার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেই। তিনি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান।
মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ফুলকলি পৌর কিন্ডারগার্টেনের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। জায়গার ব্যবস্থা হলেই এটি স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মাধবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।