সরকারি চাকরিজীবীরা আসন্ন অর্থবছরে ইনক্রিমেন্ট পেতে পারেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাদের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট সুবিধা দেয়া হতে পারে। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা এ সুবিধা পাবেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা প্রশাসনের অর্থ সংক্রান্ত কর্মকর্তারা। এ পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়লেও বাড়ছে না এমপিও শিক্ষকদের। তবে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ বা সিদ্ধান্ত দেয়া হলে তারাও ইনক্রিমেন্ট পেতে পারেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
তবে সরকার ইনক্রিমেন্ট সুবিধা ঘোষণা করলে সরকারি কর্মচারী হিসেবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ৪ লাখ শিক্ষক, বিভিন্ন সরকারি কলেজে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষক ও বিভিন্ন সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষকরা সে সুবিধা পাবেন।
জানা গেছে, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকারের অর্থ বিভাগ। এ জন্য চাকরি (বেতন-ভাতাদি) আদেশ-২০১৫ সংশোধন করা হচ্ছে। আদেশের ৩ ধারায় সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতিবছর বেতন বৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু, সম্প্রতি তাদের মহার্ঘ ভাতার আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বৃদ্ধির নির্দেশনা দেন।
বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, নতুন বাজেটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ বা এমপিওভুক্তির জন্যও কোনো বরাদ্দ থাকছে না। সরকারি চাকরিজীবীরা পে স্কেলের বদলে আগামী অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট পেতে পারেন। চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়াকে বিবেচনায় নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ ভাতার জন্য প্রস্তাব তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে এর আওতায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পড়বেন না বলেই জানা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বাজেট শাখার উপসচিব মো. নূর-ই-আলম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এর অন্তর্ভুক্ত হবেন কি-না তা সরকারের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করছে। সাধারণ সরকারি কর্মচারীদের জন্য কিছু ঘোষণা এলে তা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সরাসরি কার্যকর হবে না। কারণ তারা সরকারি কর্মচারী নন।
তিনি আরো বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত ছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি হয় না। আর সরকারি কর্মচারীদের জন্য ইনক্রিমেন্টের ঘোষণা এলে সে অনুসারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির জন্য আলাদা নির্দেশনার প্রয়োজন হবে। আর তা আসতে হবে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে।
শিক্ষার একটি অধিদপ্তরের অর্থ শাখায় কর্মরত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি কর্মচারী নন। বিশেষ পদ্ধতিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন হয়। তাদের বেতন বাড়াতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনার প্রয়োজন হবে। তবে, সরকারি কলেজ ও স্কুলে কর্মরত যেসব সরকারি কর্মচারী শিক্ষক রয়েছেন তারা এ সুবিধা পাবেন।
এদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণে দাবি জানাচ্ছেন। শিক্ষক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেয়ারও দাবি জানানো হয়েছিলো। শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন শিক্ষাখাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাস থেকে সরকারি কর্মচারীরা ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট সুবিধা পেলেও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ৮ নভেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই থেকেই শিক্ষকরা পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।