ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে খুনের উদ্দেশে অপহরণ মামলায় শিলাস্তি রহমান (২২) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তি প্রদানের আগে দুই দফায় ১৩ দিনের রিমান্ডে ছিলেন শিলাস্তি। গতকাল সোমবার তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারি পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান। ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এছাড়া ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত গ্রেপ্তার তিন ও পলাতক সাত আসামির ব্যাংক হিসাবের তথ্য গোয়েন্দা পুলিশকে সরবরাহ করার আদেশ দেন। ওই ১০ আসামি হলেন— শিমুল ভূঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভূঁইয়া, সেলেষ্টি রহমান ওরফে শিলাস্তি রহমান, সিয়াম হোসেন, আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল আলী সাজি, তাজ মোহাম্মদ খান ওরফে হাজী, চেলসি চেরি ওরফে আরিয়া ও জামাল হোসেন।
আবেদনে বলা হয়, অজ্ঞাত আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে ভারতের কলকাতায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক তদন্ত ও গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, আসামিরা ভিকটিমকে কলকাতার নিউটাউন এলাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। তারা প্রমাণ নষ্ট করার উদ্দেশে ভিকটিমের মৃতদেহের হাঁড় ও মাংস আলাদা করে মাংসপিণ্ড টয়লেটের কমোডে ফেলে দেয় এবং হাঁড়গুলো গারবেজ-পলিতে ভরে ট্রলি ব্যাগে করে আশপাশের খালে ফেলে দেয়।
আবেদনে আরো বলা হয়, আসামিরা দীর্ঘদিন যাবৎ ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিলো। তারা পরিকল্পনা করে, মামলার ভিকটিমকে কীভাবে অপহরণ করে টাকা আদায় করবে এবং টাকা নেয়ার পর কীভাবে হত্যা তথা লাশ গুম করবে। গ্রেপ্তার করা আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বর্ণনা পাওয়া গেছে। মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ আসামির এনআইডি ও পাসপোর্ট নাম্বারের বিপরীতে কোন ব্যাংকে কয়টা অ্যাকাউন্ট আছে, তার তথ্য সরবরাহ করার জন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বরাবর আদেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। আনোয়ারুল আজিম অপহরনের ঘটনায় তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণের এ মামলা করেন।