দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইন বিভাগে (এলএলবি) প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি না করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। গত বৃহস্পতিবার বার কাউন্সিলের সচিব ড. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মহামান্য আপীল বিভাগের ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রদত্ত রায়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অভিন্ন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এলএলবি প্রোগ্রামে সেমিস্টার প্রতি ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো অনুমতি নেই। আদালত কর্তৃক কোনোরূপ আদেশ/রায় ব্যতিরেকে এলএলবি প্রোগ্রামে প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করার আইনগত সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনার অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ বরাবর পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে এলএলবি সনদধারীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। কয়েকটি মানহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি সেমিস্টারে শত শত শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে সনদ দিয়েছে বছরের পর বছর। বিভিন্ন মানহীন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেকেই এলএলবি সনদ নিয়েছেন, যাদের ভেতর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাজনীতিক রয়েছেন। তারা শুধু ডিগ্রি নিয়েই ক্ষান্ত হন না। বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্তির জন্য পরীক্ষাও দেন। পরীক্ষায় নকলের সুযোগ না পেলে প্রশ্ন কঠিন হওয়ার অজুহাতে কেন্দ্রে ভাঙচুরও চালান।
আরও উল্লেখ্য, বার কাউন্সিল পরীক্ষায় বই দেখে লেখার ইতিহাস পুরনো। কিন্তু এতে লাগাম টানেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ অন্যরা। তিনি প্রকাশ্যে বলেন, আইনজীবীর সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে।
তারপর আগের মতো নিয়মিত বার কাউন্সিলের পরীক্ষা নেয়া হয়নি। গত কয়েকবছরে পদ্ধতি আধুনিকায়নসহ অনেক উন্নতি হয়েছে পরীক্ষায়। তবে, এতে মন খারাপ হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো থেকে আইনের সনদধারীদের। তারা গত ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরের পরীক্ষায় নকল করতে না পেরে ভাঙচুর করেছেন। গ্রেফতারও হয়েছেন অনেকেই।
এসব নিয়ে গতকাল রোববার দৈনিক আমাদের বার্তায় ‘প্রধান বিচারপতি কি আইনজীবীদের কর্মপরিধি নির্ধারণ করে দেবে’ শিরোনামে সরল-গরল বিভাগে বিশেষ কলাম প্রকাশ করে। তাতে দৈনিক আমাদের বার্তার প্রধান সম্পাদক ও দৈনিক শিক্ষাডটকম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খান প্রধান বিচারপতির সুবিবেচনা কামনা করেন।
বার কাউন্সিলের নতুন নির্দেশনা এলএলবি সনদ হাতানোর বেপরোয়া গতিতে লাগাম পরাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও নির্দেশনাটি নতুন নয়। পাঁচ বছর আগের নির্দেশনা নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে।