বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক কমল দাশগুপ্ত এর জন্মদিন আজ। তিনি ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে নড়াইল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা তারাপ্রসন্ন দাশগুপ্ত ছিলেন উচ্চাঙ্গ সংগীতের অনুরাগী। পুরো নাম কমলপ্রসন্ন দাশগুপ্ত হলেও তিনি কমল দাশগুপ্ত নামেই পরিচিত। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ইসলাম ধর্ম এবং কামালউদ্দীন আহমদ নাম গ্রহণ করে তিনি বাংলাদেশের প্রখ্যাত নজরুল সংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগমকে বিয়ে করেন।
কমল দাশগুপ্তের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কলকাতায়। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ক্যালকাটা একাডেমি থেকে ম্যাট্রিক এবং পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিকম পাস করেন। মীরার ভজনে সুরের প্রয়োগ বিষয়ে গবেষণা করে তিনি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট অব মিউজিক ডিগ্রি লাভ করেন।
বাংলা চলচ্চিত্রের সুরকার হিসেবেও কমল দাশগুপ্ত খ্যাতি অর্জন করেন। তার সুর দেয়া ও গাওয়া ‘তুফান মেল’, ‘শ্যামলের প্রেম’, ‘এই কি গো শেষ দান’ চলচ্চিত্রের এ গানগুলো এককালে ভীষণ জনপ্রিয় ছিলো। অনেক হিন্দি ছায়াছবিতেও তিনি সংগীত পরিচালনা করেন। তিনি প্রায় ৮০টি ছায়াছবিতে সংগীত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। আমেরিকার ওয়ার প্রপাগান্ডা ছবির নেপথ্য সংগীতেও তিনি কাজ করেন। সংগীত পরিচালক হিসেবে তার শেষ ছবি ‘বধূবরণ’। কমল দাশগুপ্ত নজরুলের ঘনিষ্ঠ সাহচর্য লাভ করেন এবং প্রায় চারশ নজরুলসংগীতে সুরারোপ তার শিল্পীজীবনের এক বিরাট কৃতিত্ব। তার সুরারোপিত গানের সংখ্যা প্রায় আট হাজার। সংগীতের ক্ষেত্রে তার মৌলিক অবদান স্বরলিপির শর্টহ্যান্ড পদ্ধতির উদ্ভাবন এবং আকারমাত্রিক পদ্ধতি ও স্টাফ নোটেশন পদ্ধতির স্বরলিপি স্থাপন।
কমল দাশগুপ্ত গ্রামোফোন কোম্পানির সংগীত পরিচালক ছিলেন। ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে গ্রামোফোন ডিস্কে তার সুরে গাওয়া বহু গান অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলো। সেসবের মধ্যে ‘সাঁঝের তারকা আমি’, ‘আমি ভোরের যূথিকা’ প্রভৃতি গান আজও জনপ্রিয়। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ২০ জুলাই কমল দাশগুপ্ত মৃত্যুবরণ করেন।