সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেছেন, শিক্ষাব্যবস্থার ধ্বংস শুরু হয় অটোপাস ও সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে। এরই ধারাবাহিকতায় সৃজনশীলতা পরিহার করে গাইড বই, নোট বই ব্যবহার করে জন্ম নেয় জাতির জন্য অভিশপ্ত নকল। আজ শিক্ষা ব্যবস্থাকে আবারও ধ্বংস করতে করোনার অজুহাতে করুণা দেখিয়ে অটোপাস চালু করে দিচ্ছে সরকার। এর মাধ্যমে জাতিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
শনিবার (২৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) আয়োজিত ‘করোনাকালীন পরীক্ষায় অটোপাস: শিক্ষার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ের পাবলিক পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয় পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে। একই বছর দুবার পরীক্ষা নেয়া হয়। তখন শিক্ষাবিদরা বুঝে উঠতে পারেননি কোনো না কোনো সময় এসে সেশনজট আসবে। অটোপাসের বন্দোবস্ত করে জাতি আজও সেই কলঙ্ক নিয়ে আছে। আজ আবার ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে এসে সেই অটোপাস দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অথচ কিভাবে অটোপাস দেয়া হবে তা বলা হয়নি। অটোপাস দেয়ার আগে যে যাদুর কাঠি দিতে হয় সরকার সেটাও দেয়নি।
মিলন বলেন, কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি করা হবে সেটা ভাবা হয়নি। দেশের সব প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে, বাজার, পরিবহন চলছে আপন নিয়মে। সব খোলা থাকবে শুধু স্কুল-কলেজ বন্ধ কেন? অবৈধ সরকারের এই অবৈধ সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। আমরা অটোপাসের এই কলঙ্ক জাতির ঘাড়ে চাপাতে দেব না।
অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ অনেকে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দাবি করেন, ‘‘অটোপাস-- এ জাতীয় প্রেসক্রিপশন যিনি দিয়েছেন তিনি একজন ডাক্তার, আমাদের শিক্ষামন্ত্রী। অবশ্য নিজের বুদ্ধিতে তিনি এ প্রেসক্রিপশন দেননি। অন্য ডাক্তাররা যেভাবে ঔষুধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টিটিভদের বুদ্ধিতে ঔষুধগুলো দেন, সেভাবে আমাদের ডাক্তার শিক্ষামন্ত্রীও অন্যের বুদ্ধিতেই দিয়েছেন। আজকে পরীক্ষা না হওয়ার কোন কারণ নেই। একটি মাত্র কারণ। আজকে শিক্ষা যদি ধ্বংস হয়ে, যায় জাতির মেরুদণ্ডও ধ্বংস হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নামের আগে পরে অনেক ডিগ্রিই থাকবে। কিন্তু আজকে শিক্ষার মানটা যদি ভেঙে যায় তাহলে চাকরি হবে না। তাই হচ্ছে। অবশিষ্ট যতটুকু আছে সেটাকে ধ্বংস করার জন্যই অটোপাস-অটো প্রমোশন। সুপরিকল্পিতভাবে তা করা হয়েছে। বাংলাদেশে আর কিছু না থাকলেও একটা জায়গায় আমরা চ্যাম্পিয়ন। বাঙালির তিন হাত, ডান হাত, বাম হাত আর অজুহাত। করোনার অযুহাতে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার কোন কারণ নেই। এই অযুহাত জাতিকে ধ্বংস করার অযুহাত।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, অটোপাসের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী।