দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জেরে নিজেদের সব করোনার টিকা বাজার থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই আরেকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানালো অ্যাস্ট্রাজেনেকা। বৃহস্পতিবার অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, এই টিকা গ্রহণ করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রক্ত জমাট বাঁধার ডিসঅর্ডার ভ্যাকসিন–ইনডিউজড ইমিউন থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া অ্যান্ড থ্রম্বোসিস (ভিআইটিটি) দেখা দিতে পারে। তবে, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিরল।
করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করলে শরীরে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়—এমন অভিযোগ কয়েক বছর ধরেই। তবে এ নিয়ে টিকা উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এতদিন চুপ করেই ছিল। এ নিয়ে যুক্তরাজ্যে এক মামলার জেরে সম্প্রতি মুখ খুলেছে একটি প্রতিষ্ঠান, অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তারা স্বীকার করেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকার বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
সম্প্রতি আদালতে জমা দেওয়া একটি নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে, তাদের তৈরি করোনার টিকার কারণে খুব বিরল টিটিএসের লক্ষণ দেখা যেতে পারে। টিটিএসের পূর্ণরূপ হলো থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম, যার ফলে মানুষের রক্তে প্লাটিলেট কমে যায় এবং দেহের ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করলে শরীরে যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল, এর মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার জটিল রোগ ভিআইটিটিও ছিল। ভিআইটিটির কারণ হিসেবে বলা হয়, এই টিকা নিলে দেহে আপনাআপনিই ক্ষতিকর একটি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। আর সেই অ্যান্টিবডি প্লাটিলেটের সঙ্গে যুক্ত প্রোটিনের বিরুদ্ধে কাজ করতে থাকে।
এর আগে গত বছর এক গবেষণায় গবেষকেরা জানান, কানাডা, উত্তর আমেরিকা, জার্মানি ও ইতালিতে যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন তাদের কারও কারও দেহে ভিআইটিটির লক্ষণ দেখা গেছে। এতে অ্যাডেনোভাইরাসের কথাও উল্লেখ করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, করোনার টিকায় বিরল নতুন আরেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করলেও অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, তাদের টিকা করোনার বিরুদ্ধে কাজ করে। এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব–একটা দেখা যায় না। এ ছাড়া তাদের আবিষ্কার করা অ্যান্টিবডি থেরাপি সিপাভিবার্ট করোনার বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর।
এ ব্যাপারে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউন থেরাপি বিভাগের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসরা রেইস বলেন, করোনার কারণে রোগপ্রতিরোধী চিকিৎসা যাদের দেওয়া হয়েছে, তাদের ঝুঁকি কিন্তু এত বেশি না। আর অ্যাস্ট্রাজেনেকা এখন সারা বিশ্বে অ্যান্টিবডি থেরাপি সিপাভিবার্টের প্রতিক্রিয়া আমলে নিয়ে কাজ করছে।