মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে ২১ দিন লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে আমরণ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষকরা। শরীরের কাফনের কাপড় জড়িয়ে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার সকাল থেকে অনশন শুরু করেন তারা। শোকের মাস আগস্ট শুরু হওয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয়করণ আন্দোলন চলছে।
মঙ্গলবার সকালে থেকেই রাজধানী ঢাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এই শিক্ষকরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের বক্তব্য-স্লোগানে মুখরিত জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ।
বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ছাড়া আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। যতোক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাবো ততোক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমাদের গন্তব্য এখন দুটি, হয় ঘোষণা বা পাঁচ মিনিটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ অথবা কবরস্থান।
তিনি বলেন, আমাদের মৃত্যুর দামেও যদি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ হয় এবং শিক্ষকদের বৈষম্য দূর হয় তাহলে আমাদের জীবন সার্থক হবে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়েছিলাম। তার সাক্ষাৎ না পেলে আজরাইলের সাক্ষাৎ বরণ করে নেবো৷ তিনি বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত থাকার শিক্ষকদের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসে অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে গত ১১ জুলাই থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কয়েকহাজার শিক্ষক। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দফায় দফায় ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও শিক্ষকরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরও কোনো ফল আসেনি। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করলেন শিক্ষকরা।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। একই কারিকুলামে একই সিলেবাসে পাঠদান করিয়েও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের থেকে এক ধাপ নিচে বেতন দেয়া হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর যাবত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা স্মার্ট করতে প্রয়োজন স্মার্ট শিক্ষক। তাই স্মার্ট শিক্ষক পেতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের বিকল্প নেই।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।