কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবস আজ - দৈনিকশিক্ষা

কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবস আজ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলা চলচ্চিত্রের সেরা অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। একজন ভারতীয় অভিনেত্রী ছিলেন। তার জন্মগত নাম ছিলো রমা দাশগুপ্ত। তিনি মূলত বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রে উত্তম কুমারের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।

১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে ‘সাত পাকে বাঁধা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সুচিত্রা সেন সেরা অভিনেত্রীর জন্য রোপ্য পুরস্কার জয় করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করে। শোনা যায়, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে তাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছিলো; কিন্তু সুচিত্রা সেন জনসমক্ষে আসতে চান না বলে এই পুরস্কার গ্রহণ করেননি। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে তাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সম্মাননা বঙ্গবিভূষণ প্রদান করা হয়।

১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সির (অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্তর্গত সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার অন্তর্গত সেন ভাঙ্গাবাড়ী) গ্রাম সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক নিবাস। পাবনা জেলার সদর পাবনায় সুচিত্রা সেন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন পাবনা পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও মা ইন্দিরা দেবী ছিলেন গৃহবধূ। তিনি ছিলেন পরিবারের পঞ্চম সন্তান ও তৃতীয় কন্যা। পাবনা শহরেই তিনি পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন কবি রজনীকান্ত সেনের নাতনী।

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে বিশিষ্ট শিল্পপতি আদিনাথ সেনের পুত্র দিবানাথ সেনের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র কন্যা মুনমুন সেনও একজন খ্যাতনামা অভিনেত্রী। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে শেষ কোথায় ছবির মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয় কিন্তু ছবিটি মুক্তি পায়নি।

১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দের দেবদাস ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেন, যা ছিলো তার প্রথম হিন্দি ছবি। উত্তম কুমারের সাথে বাংলা ছবিতে রোমান্টিকতা সৃষ্টি করার জন্য তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বিখ্যাত অভিনেত্রী। ১৯৬০ ও ১৯৭০ দশকে তার অভিনীত ছবি মুক্তি পেয়েছে। স্বামী মারা যাওয়ার পরও তিনি অভিনয় চালিয়ে গেছেন, যেমন হিন্দি ছবি আন্ধি। এই চলচ্চিত্রে তিনি একজন নেত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। বলা হয় যে চরিত্রটির প্রেরণা এসেছে ইন্দিরা গান্ধী থেকে। এই ছবির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং তার স্বামী চরিত্রে অভিনয় করা সঞ্জীব কুমার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছিলেন। হিন্দি চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর দাদাসাহেব সম্মাননা প্রদান করে ভারত সরকার। চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এ সম্মাননা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে দাদাসাহেব সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। সম্মাননা নিতে কলকাতা থেকে দিল্লি যেতে চাননি বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে সুদীর্ঘ ২৫ বছর অভিনয়ের পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এর পর তিনি লোকচক্ষু থেকে আত্মগোপন করেন এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় ব্রতী হন। দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য সুচিত্রা সেন মনোনীত হলেও কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সশরীরে পুরস্কার নিতে দিল্লি যাওয়ায় আপত্তি জানানোর কারণে তাকে পুরস্কার দেয়া হয়নি।

২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮২ বছর বয়সে সুচিত্রা সেনের মৃত্যু হয়। তিন সপ্তাহ আগে ফুসফুসে সংক্রমণের জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার শেষকৃত্যে গান স্যালুট দেবার কথা ঘোষণা করেন। 

রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত অফিস চলবে ৯টা-৩টা - dainik shiksha রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত অফিস চলবে ৯টা-৩টা দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী এইচএসসির উত্তরপত্র জমা নিচ্ছে না বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসির উত্তরপত্র জমা নিচ্ছে না বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত শিগগিরই - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত শিগগিরই মোবাইল ইন্টারনেট চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত কাল - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত কাল তিন সমন্বয়ক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন বলে ডেকে নেয়া হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী - dainik shiksha তিন সমন্বয়ক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন বলে ডেকে নেয়া হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028460025787354