টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য থামছে না। গত এক সপ্তাহে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়েছে অন্তত ১৫ এসএসসি পরীক্ষার্থী।
এ সব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের অধিকাংশ স্কুলপড়ুয়া ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থী। এরা দল বেঁধে দ্রুতবেগে মোটরসাইকেল চালানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ শুরু ও ছুটির সময় ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করাসহ বিভিন্নভাবে ভয় দেখায় তারা। প্রকাশ্যে অহরহ মাদক সেবন ও মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালায়। এ সব কাজে বাধা দিলে তাদের হামলার শিকার হতে হয়।
প্রতিবছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে উপজেলা সদরে এ সব কিশোর গ্যাং বেপরোয়া হয়ে ওঠে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা সদরের বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। গত এক সপ্তাহে এ সব গ্যাংয়ের সদস্যদের হামলার শিকার হয়েছে অন্তত ১৫ এসএসসি পরীক্ষার্থী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা ভয়ে অভিযোগ করতে সাহস পান না।
গত ৯ মে দুপুর ২টার দিকে মির্জাপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় এসএসসি পরীক্ষার্থী শান্ত, শিশির, সিফাত, শাকিল, রাহিম, নাদিম, রাব্বি, রোহান, ইসরাফিল, হাসান, ফাহিম ও খালেক আহত হয়। তাদের মধ্যে সিফাতকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুরণী গ্রামের মানুষ দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এর আগে ৮ মে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয় দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী।
সবশেষে গত মঙ্গলবার পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের শওকত শিকদারের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী আশরাফুল সিকদার (১৭) কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের হামলায় আহত হয়।
এই তিনটি হামলার মধ্যে দুটি ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পরিবার থানায় মামলা করেছে। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
মির্জাপুর থানার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য সদস্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ গত এক সপ্তাহে অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক মোটসাইকেল আটক করেছে।