চার মাসের শিশু তোহা আক্তার। মায়ের সাধারণ অপরাধে থানাহাজতের ভেতরে রাত কাটাতে হয়েছে নিষ্পাপ এই দুগ্ধপোষ্য শিশুটিকে। একই ঘটনায় চার ঘণ্টা থানাহাজতে ওই মহিলার নিরপরাধ স্বামীকেও আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিলের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে স্থানীয়দের মাঝে।
আব্দুল মোতালেব অভিযোগ করে বলেন, যদি কোনো ধরনের অপরাধ করে থাকে সেটি আমার স্ত্রী করেছে। তার কারণে তো আর আমাকে অসুস্থ অবস্থায় চার ঘণ্টা থানার হাজতে আটকে রাখতে পারে না? আমার শিশু কন্যা তোহা কী অপরাধ করেছে যে তাকেও সারা রাত হাজতের ভেতরে আটকে রাখতে হলো? পুলিশ চাইলে কি আমার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে থানায় ভিকটিমদের রুমে রাখতে পারত না? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ দিকে স্বেচ্ছাসেবী আইনজীবী সংগঠন ব্লাস্ট-এর কুমিল্লা শাখার সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ নুরু বলেন, একজনের অপরাধে অন্যজনকে সাজা দেয়া যায় না, শিশুদের জন্য আলাদা সেল থাকে, যদি পুলিশ হাজতে শিশুটিকে রাখে তাহলে এটা ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর বলেন, ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য সুমি আক্তারের বাড়িতে গেলে সে পালিয়ে যায়। এ সময় তার স্বামীকে দেখে নেশাগ্রস্ত মনে হওয়ায় ওসি সাহেবকে জানালে তিনি তাকে থানায় নিয়ে আসতে বলেন। পরে তার স্ত্রী থানায় এলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তাকে হাজতে রাখা হয়নি, একটি রুমে রাখা হয়েছিল।
মুরাদনগর থানার ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিল বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সুমি আক্তার ও তার শিশু সন্তানকে থানা হাজতের ভেতরে রাখার বিষয়টি মিথ্যা। কারণ আমার থানায় কোনো নারী সেল নেই। তাকে থানার নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়েছে। অপর দিকে তার স্বামীকে তুলে এনে চার ঘণ্টা আটকে রাখার বিষয়টিও মিথ্যা। এ ধরনের কোনো ঘটনাই মুরাদনগর থানায় ঘটেনি।
মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযূষ চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ দিকে এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।