কুবি ক্যাম্পাসের ভেতর খাবারের দোকান চান শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

কুবি ক্যাম্পাসের ভেতর খাবারের দোকান চান শিক্ষার্থীরা

কুবি প্রতিনিধি |

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আশেপাশের হোটেলগুলোতে খাবারের দাম লাগামহীন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা বলে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে হোটেল মালিকরা। এমনটাই অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান উন্নত করা ও ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে খাবারের দোকান বসানোর দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলের ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়া বাদে কুবি শিক্ষার্থীরা নির্ভর করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের দোকানগুলোতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনেই রয়েছে আল-মদিনা হোটেল, মামা হোটেল। এই দুই হোটেলে খাবারের মূল্য প্রায় একই রকম হারে পরিবর্তন হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  সকালের নাস্তায় পরোটার দাম এখন ১০ টাকা, যা আগে ছিল ৫ টাকা। ডিমের সাথে ডাল ছিলো ফ্রি, কিন্তু এখন  ডাল নিলে দিতে হয় অতিরিক্ত ৫ টাকা। এছাড়া  খিচুড়ির দাম ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা হয়েছে, তেহারি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে  দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়। সিঙ্গারা, সমুচা ছিল ৫ টাকা করে। এখন তা ১০ টাকা।

দুপুর বা রাতের খাবারে ডিম ২৫ টাকা, মাছ ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, মাংসের মধ্যে দেশি মুরগী ১২০ টাকা ব্রয়লায় মুরগী ৬০ টাকা। যা আগে ছিল ৪০ ও ১০০ টাকা। যেকোনো ভাজির দাম ২০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৩০ টাকা হয়েছে। ৬০ টাকার রুই মাছ এখন ৭০ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল শান্ত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের ক্যাফেটেরিয়ার খাবারে প্রায়ই পোকা পাওয়া যায়। ফলে ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার খেতে ইচ্ছা করে না। আবার ক্যাম্পাসের বাইরে যে দোকান আছে সেগুলোতে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে রাখছে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান বৃদ্ধি ও প্রশাসনের অধীনে কয়েকটি খাবারের দোকান করে দিলে হোটেল ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া ব্যবসা কমতো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাসফিয়া তাসনিম আরশি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরের দোকানগুলো থেকে আমাদের দাম বেশি দিয়ে কিনতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দোকান হলে বা ক্যাফেটেরিয়া যদি উন্নত করা যায় তাহলে আমরা সেখান থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস কম দামে কিনতে পারবো। মাস শেষে কিছু টাকাও সাশ্রয় হবে।

খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে মামা হোটেলের পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে খাবারের মূল্য কিছুটা বেড়েছে। সিন্ডিকেটের কোনো বিষয় না। আমার এখানে কম দামী খাবার হিসেবে দুপুরের জন্য শুধু এক পাতিল সবজিসহ অন্যান্য ভর্তা থাকে।

আল-মদিনা হোটেল অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউজের পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, খাবারের দাম কমাতে হলে আমাকে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সপ্তাহে তিন দিন বন্ধ থাকলেও আমার হোটেল বন্ধ থাকে না। হোটেলের আয় থেকেই কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়। গ্যাস, পানি, বিদ্যৎ বিলসহ সবই আমার নিজ থেকে দিতে হয়।

খাবারের মান ও দাম নিয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীরা যখনই আমাদের কাছে আসে আমরা তাদের জন্য পদক্ষেপ নেই। বিষয়টা আমরা শুনতে পেরেছি। এই সপ্তাহেই আমরা প্রক্টরিয়াল বডি হোটেল মালিকদের নিয়ে বসবো।

একই অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ারও। সেখানে খাদ্যের মানের উন্নতি না হলেও দামের উন্নতি হয়েছে। সকল ধরনের ভাজির দাম ৫ টাকা করে বেড়েছে। এছাড়া মুরগির ঝাল ফ্রাইয়ের দাম ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা হয়েছে। এছাড়া ক্যাফেটেরিয়ার খাদ্যে প্রায়ই পাওয়া যায় পোকা। এ নিয়ে বারবার অভিযোগের পরও উন্নতি করা হয়নি খাদ্যের মান।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার ম্যানেজার মান্নু মজুমদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বাজারের পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া তো কোনো উপায় নেই। আর  ক্যাফেটেরিয়া যেনো সব সময় পরিষ্কার থাকে সেই চেষ্টা করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াকে আমরা আরো উন্নত করবো। শিক্ষার্থীরা যাতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারে সেজন্য ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে একটা ফুড কোর্ট তৈরি করবো।

সার্বিক বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কুমিল্লা জেলার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা খাদ্যের দামের ব্যাপারে তো মন্তব্য করতে পারি না। তবে খাদ্যের মানে যদি সমস্যা থাকে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। আমাদের অভিযান চলমান। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে জানলাম। যে কোনোদিন অভিযানে আসবো। খাবারের মানে গরমিল পাওয়া গেলে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবো।

প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ - dainik shiksha প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা - dainik shiksha ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ - dainik shiksha বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ - dainik shiksha ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে - dainik shiksha নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে - dainik shiksha আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047299861907959