দৈনিক শিক্ষাডটকম, কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান এবং লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌসের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে দুই বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে বেলা সাড়ে ১১টায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা ও দুপুর ১টায় লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পৃথক ওই মানববন্ধন পালন করে।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী হিজবুল্লাহ আরেফিন তাজবী বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় কীভাবে একজন শিক্ষক আরেক শিক্ষকের ওপর হামলা চালায়! এই রকম অমানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।’
অন্যদিকে, লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২৮ তারিখ যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, আমরা সেটার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। শিক্ষকরা যেখানে হামলার সম্মুখীন হয়েছে সেটা খুবই লজ্জার। দাবি জানাচ্ছি- সব ধরনের বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটিয়ে ক্যাম্পাসকে শিক্ষার্থীবান্ধব হিসেবে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন রেজওয়ানা বলেন, ‘একজন মানুষের ভেতর রাগ-বিদ্বেষ থাকতে পারে। কিন্তু তাই বলে একজন শিক্ষক আরেক শিক্ষকের ওপর হামলা করতে পারে! এই অবস্থায় কীভাবে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি করবেন। তার পাশাপাশি আপনি হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধ করে দিলেন, এইভাবে শিক্ষার্থীদের কোণঠাসা করার দরকার কি?’
লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখানে আমাদের অধিকারের কথা বলতে এসেছি, নিপীড়নের কথা বলতে এসেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কেন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে? তিনি (ভিসি) চিন্তা করেছেন এই সময়টাতে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলে তার জন্য উপকার হবে। একজন ভাইস চ্যান্সেলর কীভাবে একজনের গায়ে হাত তুলতে পারে? এমন কোনো নজির পৃথিবীর ইতিহাসে আছে? উনি আমাদের প্রিয় সহকর্মী লতা ম্যামকে অপমান করেছেন। উনি এখানে থাকার সমস্ত যোগ্যতা হারিয়েছেন। আমরা আপনাকে আর চাই না। আপনি এখানে আর আসবেন না।’
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন, বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা এবং সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান, সহকারী অধ্যাপক সাদেকুজ্জামান, সহকারী অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, সাথী রানী কুন্ডু, মুতাসিম বিল্লাহ, নাইমুল হুদা এবং রেজওয়ানা আফরিন রুম্পাসহ বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে শিক্ষক সমিতি বাধা প্রদান করে। তখন ছাত্রলীগ, শিক্ষক, উপাচার্যের ত্রিমুখী ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তি হয়। সে সময় ধাক্কাধাক্কিতে আঘাতপ্রাপ্ত হন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস।