দৈনিক শিক্ষাডটকম, বান্দরবান: বান্দরবানের রুমায় সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নারীসহ তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, আগামীকাল শুক্রবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, লাল রিন ত্লোয়াং বম (২০), ভান নুয়াম থাং বম (৩৭) ও ভান লাল থাং বম (৪৫)। তাঁরা সবাই রুমার ইডেন পাড়ার বাসিন্দা।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে একই অভিযোগে কেএনএফের সহযোগী লাল লিয়ান সিয়াম বমকে রুমার বেথেল পাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
রুমা ও থানচিতে তিন ব্যাংক লুট, থানচি থানা ও আলীকদমে চেকপোস্টে আক্রমণের ঘটনায় আজ পর্যন্ত কেএনএফ সংশ্লিষ্টতায় ৫৮ জন গ্রেফতার হলো।
গত ২ এপ্রিল রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে ৮টি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন। এর পরদিন থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়।
৪ এপ্রিল রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে রুমা বাজার থেকে উদ্ধার করে র্যাব। এর পরপরই থানচি থানা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই গোলাগুলি চলে।
স্থানীয়রা বলছেন, থানচি থানার পাশে প্রথম গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে তা থানচি বাজারের কাছে চলে আসে। এ সময় কেএনএফ সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময় হয়। পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে তাঁরা প্রায় ৫০০ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে।
এর রেশ কাটতে না কাটতেই ওইদিন মধ্যরাতে আলীকদমের ২৬ মাইল ডিম পাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর চেক পোস্টে হামলা হয়। সবগুলো ঘটনার সঙ্গেই কেএনএফ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। অভিযানের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল কেএনএফের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক চেওশিম বমকে বান্দরবানের বাসা থেকে গ্রেফতার করার তথ্য জানায় র্যাব–১৫। পরদিন বেথেল পাড়ায় (বম পাড়া) যৌথ অভিযানে ৭টি দেশীয় বন্দুক, ২০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এ সময় ৩১ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী গ্রেফতার হন।