দৈনিক শিক্ষাডটকম, রংপুর : রংপুরের পীরগাছায় বিক্রির সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ মণ বই উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। এ সময় বইগুলোর ক্রেতা সাইফুল ইসলামকে আটক করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের পাওটানা হাট সংলগ্ন এলাকা থেকে বইগুলো উদ্ধার করা হয়।
আটক সাইফুল ইসলাম একই ইউনিয়নের দামুশ্বর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিকের নতুন বই বিক্রি করেন দক্ষিণ ছাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইদুল ইসলাম। ২০ টাকা কেজি দরে মোট ৪৪০ কেজি বই কিনে নেন সাইফুল।
বস্তায় ভরে ভ্যানে করে বইগুলো নিয়ে যাওয়ায় সময় পাওটানাহাট সংলগ্ন এলাকায় তাকে আটক করে স্থানীয়রা। সরকারি বই এভাবে বিক্রির ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় সাইফুলকে ছাওলা ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়।
খবর পেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেলে, বইসহ সাইফুলকে তার কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে বইসহ সাইফুলকে থানায় নেয় পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, মাইদুল ইসলাম দক্ষিণ ছাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং তার স্ত্রী আছিয়া বেগম দৌলত খা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক।
তারা উপজেলা শিক্ষা অফিসের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে ১০-১২টি বেসরকারি স্কুলের নামে বিপুল পরিমাণ বই উত্তোলন করে আসছেন। পরে ওই বইগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতেন মাইদুল ইসলাম।
পাওটানা হাটের ব্যবসায়ী শামসুল ইসলাম বলেন, 'মাইদুল ইসলামের কাছে এতো বই কীভাবে এলো তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।'
বই ক্রেতা সাইফুল ইসলাম জানান, বইগুলো তার কাছে বিক্রি করেছেন মাইদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আছিয়া বেগম। বই নেওয়ার সময় যেন কেউ না দেখতে পায় সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলেছিলেন তারা।
মাইদুল ইসলামের ভাষ্য, 'আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। বই বিক্রির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। যে সময়ে বই বিক্রি করা হয়েছে বলা হচ্ছে, ওই সময় আমি স্কুলে ছিলাম।'
পীরগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, 'ঘটনাস্থল থেকে সাড়ে ৪৪০ কেজি বই উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সত্যতা পাওয়ায় প্রধান শিক্ষক মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।'
যোগাযোগ করা হলে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, 'সাইফুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষককে আটকের জন্য অভিযান চলছে।'