কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশে চলমান আন্দোলনে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেনের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তি সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সরকারি চাকরির কোটা পদ্ধতি বিষয়ে দেশব্যাপী সৃষ্ট সংঘাতময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বিশেষত কোটাবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। সম্ভাবনাময় তরুণ প্রাণের অকালে ঝরে যাওয়া দেশ ও জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাই। সেই সাথে সহিংসতার ফাঁদে পা না দিয়ে কোটা সংস্কার প্রসঙ্গে আদালতের সুচিন্তিত রায়ের জন্য শিক্ষার্থীদের ধৈর্যশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানাই।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এতদপ্রসঙ্গে বুধবার বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া সময়োচিত ভাষণকে স্বাগত জানানো হয়। বিশেষত চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাঙ্গনে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ পরিহার ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাময়িকভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দৃঢ় পদক্ষেপের প্রশংসা করা হয়। একই সাথে কোটা পদ্ধতি সংক্রান্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সহানুভূতিশীল মানসিকতা থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে কোটা প্রথা রহিত করার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানানো হয়। বর্তমানে বিষয়টি উচ্চ আদালতের এখতিয়ারধীন শুনানির অপেক্ষায় বিধায় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বিদ্যমান। সংবিধান সমুন্নত রাখা স্বাধীন দেশের সকল নাগরিকের একান্ত কর্তব্য। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের রায়ের জন্য নির্ধারিত শুনানির দিন পর্যন্ত অপেক্ষার বিকল্প নেই।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘দেশের ভবিষ্যৎ হিসেবে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধ ও স্নেহশীলতার কোনো ঘাটতি নেই। তাদের যেকোনো চাওয়া কিংবা সমস্যা সমাধানের জন্য অভিভাবক শ্রেণি, শিক্ষক ও শিক্ষানুরাগী সমাজ সবসময় তাদের পাশে থাকবে। সেক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী মহলের যেকোনো আত্মঘাতী প্ররোচনা থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখার দায়িত্বটুকু শিক্ষার্থীদের সচেতনভাবে পালন করা জরুরি।’
সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি আশা করে, সংঘাত-সহিংসতা মুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষার্থে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয় কিংবা ক্যাম্পাস বন্ধ রাখতে হয় এমন সকল কার্যক্রম থেকে নিজেদের বিরত রাখবে এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করবে। চলমান অবস্থা দীর্ঘায়িত তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং জাতি হিসেবে আমরা পিছিয়ে পড়বো। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সমন্বিত রাখার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার সার্বিক সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।’