উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা পাস করা ১০ লাখ ১২ হাজার শিক্ষার্থীর সবাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন না। তাদের অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য বেছে নেবেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। নানা অনিয়মের অভিযোগে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সতর্ক করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ইউজিসি।
‘ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য কয়েকটি বেসরকরি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য’ শিরোনামে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
গত ২৯ মার্চ কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক মো. ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর অধীনে বর্তমানে ১১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন রয়েছে। এর মধ্যে ১০২টির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মামলা মোকদ্দমাসহ বিভিন্ন ধরণের সমস্যা বিরাজমান সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা আগের ধারাবাহিকতায় প্রকাশ করা হলো। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হালনাগাদ তথ্য নিয়মিতভাবে কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সমস্যায় থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে ইউজিসি।
অবৈধ ক্যাম্পাসে ও অবৈধভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে তিন বিশ্ববিদ্যালয় :
অবৈধ ক্যাম্পাসে ও অবৈধভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জানিয়েছে ইউজিসি। এ বিশ্ববিদ্যালয় তিনটি হলো, ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা।
এ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসি বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমের আর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। অনুমোদিত কোনো ক্যাম্পাস ও ঠিকানা এবং ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। বৈধ কোনো কর্তপক্ষ নেই। ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী একাডেমিক প্রশাসনিক, আর্থিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা ও ফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।
ভর্তি বন্ধ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে :
পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ আছে বলে জানিয়েছে ইউজিসি। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি।
ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ইউজিসি বলছে, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে থেকে চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত ভিসি এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রো- ভিসি ও ট্রেজারার নেই। বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতি, অপ্রতুল শিক্ষক সংখ্যা, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, শিক্ষা সহায়ক ক্যাম্পাসের অনুপস্থিতি, লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় পাঠ্যবইয়ের অপ্রতুলতা এবং সব কারিকুলামের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কমিশন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইউজিসি আরো বলছে, নির্ধারিত সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাসহ সব কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হওয়ায় কমিশন নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি।
বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং আদালতে মামলা বিচারাধীন চারটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ইউজিসি। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো, ইবাইস ইউনিভার্সিটি (ঢাকা), ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (কুমিল্লা) এবং সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ঢাকা)।
৩২ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ করা ভিসি নেই :
ইউজিসি আরো বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জিত ডিগ্রির মূল সার্টিফিকেটে স্বাক্ষরকারী হবেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বা আচার্যের নিয়োগকৃত ভাইস-চ্যান্সেলর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ১০২ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত ভিসি রয়েছেন ৭০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ক্যাম্পাসে এবং অনুমোদিত প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার জন্য ইউজিসির ওয়েবসাইট (www.ugc.gov.bd) থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ভর্তি হওয়ার জন্য ভর্তিচ্ছুদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।