ক্যামেরার চোখে ৩৬ জুলাই - দৈনিকশিক্ষা

ক্যামেরার চোখে ৩৬ জুলাই

আমাদের বার্তা ডেস্ক |

তানি জেসমিনের দিনভর আলোকচিত্র প্রদর্শনী বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার প্রদর্শনীর বিষয় ৩৬ জুলাই।  

প্রদর্শনী প্রসঙ্গে তানি জেসমিনের বক্তব্য, ঠিক সৌখিনতা বলবো না, মোহ থেকেই আলোকচিত্র ধারণে আসা। ৭১ এর প্রজন্ম, স্বাধীন বাংলাদেশের সমসাময়িক। এদেশের ইতিহাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনের সাক্ষী, যার স্বাদ আমার নেয়া সম্ভবপর হয়নি। জন্মগত ও রাষ্ট্রগতভাবে পঞ্চাশ ঊর্ধ্বে এসে ফের আরেকটা গনঅভ্যুত্থান সংঘটিত হতে দেখলাম, ২০২৪ এর ‘৩৬ জুলাই’ আন্দোলন। 

ইতোমধ্যে আমার কাঁধে বেশ পাকাপোক্ত ভাবে ক্যামেরা ঝুলে গেছে। মানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা দায়িত্বশীলতার কাজ, অনুভব করলাম। শুধুই ব্যক্তিগত ভালো লাগার তাগিদে নয়, নাগরিক অবস্থান থেকেও। আমি আমার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে যতটা পেরেছি সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছি। নাহলে যে বাস্তবিক স্বাদটা নেয়া হতে বঞ্চিত হতাম। আমার আলোকচিত্রে ও অভিজ্ঞতায় কিছুই সংগ্রহ হতো না। জানা হতো না আন্দোলনে বাস্তবিক রূপ কতোটা তীব্র হতে পারে! প্রতিবাদ মিছিলে রাজপথ কতোটা ঝাঁঝালো হতে পারে। শ্লোগানে বাতাস কতোটা মুখরিত হয়। রক্তাক্ত ক্যাম্পাস কিভাবে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। দেখা হতোনা তেজদীপ্ত তারুণ্যের অগ্নুৎপাত। দেখা হতো না সহোযোদ্ধারা কতোটা নির্ভরতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয় এগিয়ে চলে। দায়িত্বশীলতায়, বোধে, আবেগে কতোটা আগুয়ান। তারা জানে কিভাবে হাতে হাত রাখতে হয়, হাল ধরতে হয়! দেখা হতো না জনতার শক্তি কিভাবে তাবৎ অপশক্তিকে পরাস্ত করতে পারে। চেনা হতোনা এই ‘অরুণ প্রাতের তরুণদল’ তারা কতোটা মহীয়ান। তার দৃঢ় কারণ তারা সচ্ছ। ‘জেনারেশন জেড’ আমাদের আলোকিত ভূবন। তাদেরকে সাধুবাদ ও শুভকামনা।

একটা বড় ঘটনার ভাঁজে ভাঁজে কতো না ছোটো ছোটো ঘটনার জন্ম নেয়, কতো ত্যাগ কতো বিসর্জন। তার কিছুই অনর্থক নয়, নইলে সংগ্রাম সার্থক হতো না। উদ্দেশ্য এক হলেই না সমষ্টিগত শক্তি তৈরি হয়, জয় হয় অবশ্যম্ভাবী। 

সৃষ্টি হতেই বিশ্ব জুড়ে কতো না সংগ্রাম, কতো আন্দোলনই না সংঘটিত হয়েছে, হয়ে চলেছে। আজ সৃষ্টি ও ধ্বংস যেনো সমান্তরাল। এই পৃথিবীর পরে একটু ভালো ভাবে বেঁচে থাকার বাসনা বুকে নিয়েও বারংবার মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে এই ধরণী, রক্তে রঞ্জিত হয়েছে এই ধরা। 

আমাদের এই ছোট্ট রাষ্ট্র খুব বেশি দিনের না হলেও বহু আন্দোলনে জর্জরিত, তাজা প্রাণের রক্তে ভিজেছে এই মাটি বহুবার। আন্দোলন মানেই তারুণ্য। তারুণ্য মানেই তেজদীপ্ত আবেগ, বলিষ্ঠ আগুয়ান। যারা হনন করে দুঃশাসন। যারা ফারাক করে শাসন ও শোষণের।

আজ তরুণদের নবজাগরণ ঘটেছে। তারা বাঁধাহীন, নির্ভীক। যারা বুঝে নিতে জানে তাদের অধিকার। তাদের ভাবনা উন্মুক্ত, গণ্ডি ছাড়িয়ে। বাংলাদেশের ‘২৪ জুলাই বিপ্লব’ জাতিকে নতুন ভাবে ভাবতে শিখিয়েছে। তাই তো বলি নতুন বাংলাদেশ, জাগরণের বাংলাদেশ। আজ স্বপ্ন দেখি দীর্ঘদিনে বৈষম্য নামক ব্যাধিতে আক্রান্ত দেশটা শুদ্ধ হবে, মুক্তি মিলবে। রক্তার্জিত স্বাধীন দেশে পরাধীনতায় ফের শোষিতের আতঙ্ক  হতে রেহাই পাবে।

পৃথিবীর সকল প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই রাষ্ট্র পরিচালক ও নাগরিকের মধ্যে একটা বোঝাপড়া থাকে, থাকতে হয়। তবে, সব রাষ্ট্র নেতারা একইরকম ভাবে নাগরিক স্বার্থ প্রাধান্য দেন না। অনৈতিকতার সেই বীজে জন্ম নেয় বৈষম্য। বৈষম্যের চারায় দিনে দিনে ফলন হয় স্বৈরাচারীত্বের। স্বৈরাচারিত্ব মড়ক লাগায় স্বার্বভৌমত্বে, যা প্রশ্নবিদ্ধ করে স্বাধীনতাকে। সৃষ্টি করে সরকার  ও জনগণের মধ্যে বিভাজন। রূপ নেয় আন্দোলনে। আন্দোলন মানেই সংঘর্ষ, রক্তপাত, অপমৃত্যু। যাতে বলিদান দিতে হয় সাধারণ নাগরিককে। আর নয়, আমরা একটি নিরাপদ, সভ্যসমাজ চাই আগামী প্রজন্মের জন্য। 

তানি জেসমিনের জন্ম ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জুলাই, যশোর নানা বাড়িতে। গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল। মানবিক বিষয়ে পড়াশোনা ঢাকাতেই। পড়েছেন অর্থনীতি, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান। 

ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056030750274658