ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা যাতে ক্যাম্পাসে যেতে পারেন, সে জন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে পরিচয়পত্র দেয়ার কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ছিন্নমূল ও ভবঘুরে ব্যক্তিদের বিচরণ নিয়ন্ত্রণে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়ার কথা ভাবছে তারা।
ক্যাম্পাসকে বহিরাগতমুক্ত করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান পরিচালিত হবে বলে ১৮ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ। ওই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা–সমালোচনা হয়। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবছে।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, সারা দুনিয়ায় অ্যালামনাই (প্রাক্তন শিক্ষার্থী) বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের একটা ‘ওনারশিপ’ আছে।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়ে প্রক্টর বলেন, ‘তাদের আমরা অনুরোধ করব, তারা সদস্যদের যেন কার্ড বা পরিচয়পত্র দেয়, যাতে যেকোনো প্রয়োজনে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এটা ব্যবহার করতে পারেন।’
এ ছাড়া এখন ক্যাম্পাসে বহিরাগতের সমস্যা ‘পদ্ধতিগতভাবে’ সমাধানের কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানান প্রক্টর। তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আমাদের প্রতিদিন ভবঘুরে আর মানসিক ভারসাম্যহীন লোকজন সামলাতে হয়। এই কাজ করতে করতে আমরা ক্লান্ত। আমরা বিষয়টি পদ্ধতিগতভাবে সমাধানের কথা ভাবছি। এর জন্য আমরা সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলছি। তারা এসে যাতে ক্যাম্পাস থেকে ভবঘুরে আর মানসিক ভারসাম্যহীন লোকজন এসে নিয়ে যায় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়, সেই প্রক্রিয়ায় আমরা যাচ্ছি।’
প্রক্টরের নতুন বিজ্ঞপ্তি
১৮ সেপ্টেম্বর প্রক্টর যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন, সেখানে বলা হয়েছিল ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সব আবাসিক, অনাবাসিক ও দ্বৈতাবাসিক শিক্ষার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে ভ্রাম্যমাণ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে বহিরাগতমুক্ত করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে অভিযান পরিচালিত হবে। সেই লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে অবস্থানকালীন প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। যেসব শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে, তাঁদের উপযুক্ত প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করছি।’
কিন্তু সমালোচনার পর সেটি সম্পাদনা করে আরেকটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন প্রক্টর। এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের আগের বিজ্ঞপ্তিটা অনেক ব্যাখ্যার দাবি রাখে। তাই পরে আরেক বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পাসে চলাচলের সময় শিক্ষার্থীদের বৈধ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। কারও পরিচয়পত্র হারিয়ে গিয়ে থাকলে উপযুক্ত প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।’ এই বিজ্ঞপ্তিতে অভিযান চালানোর কথা উল্লেখ করা হয়নি।
প্রক্টর বলেন, ক্যাম্পাসে যখন কোনো ঘটনা ঘটে, তখন তার সঙ্গে যুক্তরা শিক্ষার্থী নাকি বহিরাগত, তা আমাদের বুঝতে হয়। সে জন্য শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র রাখতে বলা হয়েছে। ছিনতাই, উত্ত্যক্ত করা, মাদক বহন বা অন্য কোনো অপরাধে শিক্ষার্থী হলে একরকম ব্যবস্থা। বাইরের কেউ হলে অন্য ব্যবস্থা। এ জন্য ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের চিহ্নিত করতে হয়।