চার বছর আগে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ও বহিষ্কৃত নেতাদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের খবর উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে একজন সংসদ সদস্যের দেয়া দুর্নীতি দমন কমিশনকে দেখে নেয়ার হুমকিকে ‘রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের হাতে সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার জিম্মি করার চেষ্টা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
শুক্রবার দৈনিক শিক্ষাডটকমের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপিতে অভিযুক্ত ও বহিষ্কৃত নেতাদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের খবরে উদ্বোগ জানায় টিআইবি।
বিজ্ঞাপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ব্যাপক আলোচিত ক্যাসিনোকাণ্ড ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ঘোষিত ‘শুদ্ধিঅভিযানের’ প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ও বহিষ্কৃত নেতা বিদেশে দীর্ঘদিন পলাতক থেকে চমকপ্রদ উপায়েদেশে ফিরে দায়িত্বশীলদের উপস্থিতিতে হকি ফেডারেশনে পুনর্বহাল হয়েছেন। একই সঙ্গে আরো একাধিক অভিযুক্ত নেতা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুনরায় সক্রিয় হওয়ার সুযোগ করে নিচ্ছেন, যা সরকার প্রধান কর্তৃক দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ঘোষণাকে পদদলিত করার প্রকট দৃষ্টান্ত। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন জোটের একজন সংসদ সদস্য দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করার কারণে দুদককে যে ভাষায় হুমকি দিয়েছেন, তা শুধু আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনই নয়, তার কর্তৃত্বাধীন সাংগঠনিক সক্ষমতাকে পেশিশক্তি হিসেবে ব্যবহারের নগ্ন উদহারণও। অথচ আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তিনি অভিযুক্তদের নির্দোষ প্রমাণ করার প্রয়াসের পথে হাটতে পারতেন।
এ পরিস্থিতিকে দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার এবং দুর্নীতি-প্রতিরোধক আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের হাতে জিম্মি করার হীন প্রয়াস হিসেবে উল্লেখ করে নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সরকার ও ক্ষমতাসীন দল দেশবাসীকে কী বার্তা দিতে চাইছে?-যে কোনো অপরাধই করা হোক না কেন, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তা থেকে পার পাওয়া যাবে! রাজনৈতিক অঙ্গনকে পেশিশক্তি ও দুর্বৃত্তায়নের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের এ অশুভ প্রক্রিয়াকে প্রতিহত করার দায়িত্ব সরকার ও ক্ষমতাসীন জোটকেই নিতে হবে।