দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) দীর্ঘ ১০ বছর চতুর্থবারের মতো সমাবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্র অনুযায়ী এ সমাবর্তনে স্নাতক ৫ হাজার ৫৫৪ জন, স্নাতকোত্তর ৫৪৮ জন, এমবিবিএস ও বিডিএসসহ প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।
বৈধ উপাচার্য না থাকায় ও প্রশাসনিক নানা জটিলতার কারণে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ সমাবর্তনে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি ৬ হাজার টাকা ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৬ হাজার টাকা এবং উভয় ডিগ্রির জন্য ১০ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে।
তবে ফি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন পাস করে যাওয়া প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড় ও ফি কমানোর জোর দাবি।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমার্বতনে ফি একই ছিল। যেখানে অংশগ্রহণ করে হাজার খানেক শিক্ষার্থী। যার রেজিস্ট্রেশন ফি ছিল একই। তার আগে ২য় ও ৩য় সমাবর্তনের ফি ছিল একক ডিগ্রির জন্য ৩ হাজার টাকা ও উভয় ডিগ্রির জন্য ৬ হাজার টাকা।
অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠার ২৮ বছরে ২৩তম সমাবর্তন আয়োজন করেছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি। সর্বশেষ ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ২৩তম সমাবর্তনে প্রায় ২ হাজার ৮৬১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে বলে জানা যায়। সেখানে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি ৫ হাজার টাকা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৫ হাজার টাকা ছিল।
এছাড়াও মানারত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি ও গ্রিন ইউনিভার্সিটি এরইমধ্যে যথাক্রমে তাদের ২য়, ৪র্থ ও ৫ম সমাবর্তনে তাদের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি ৭০০০, ৭৫০০, ৭৫০০, টাকা ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১০০০০, ৭৫০০, ৭৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছে।
এদিকে রেজিস্ট্রেশন ফি প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়। তারিখ নির্ধারণ ছাড়াই গত ৩ মে থেকে চালু হয়েছে ৪র্থ সমাবর্তনের নিবন্ধন প্রক্রিয়া। তবে সমাবর্তনের সম্ভাব্য সময় অক্টোবর মাস ধরে সময়সীমা ১ মাস বাড়িয়ে ২ জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এর মাঝে ১৯ মে নির্ধারিত ফি কমিয়ে অর্ধেক করার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে স্মারকলিপি জমা দেন সাবেক শিক্ষার্থীরা।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণের ফি কমিয়ে একক ডিগ্রির ক্ষেত্রে ৩ হাজার ও উভয় ডিগ্রিতে ৫ হাজার নির্ধারণের দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) জুয়েল রানা বলেন, সমাবর্তনের নামে এত টাকা ফি নেয়াটা হতাশাজনক। একজন বেকার গ্র্যাজুয়েটের পক্ষে এত টাকা ফি দিয়ে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। ফি কমানোর দাবির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই এসোসিয়েশনের জোরদার অবস্থান থাকা জরুরি।
নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানোর পরও ফি না কমালে সমাবর্তনের নিবন্ধন করবেন না বলে জানান সাবেক শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও তারা শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বিবেচনা করে পুনরায় পরিকল্পনা করে সহনীয় ফি নির্ধারণের দাবি জানান।
এদিকে সাবেক শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক যে সকল গ্রাজুয়েট ইতিমধ্যেই নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে মূল সনদপত্র উত্তোলন করেছেন, তাদের সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন ফি না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান সমাবর্তন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন জানান, সমাবর্তনের ফি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা অনুপাতে যা যথেষ্ট না। বিশ্ববিদ্যালয়সহ নির্ধারিত কিছু জায়গা থেকেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে। বহুল কাঙ্ক্ষিত এই অনুষ্ঠানকে উৎসবমুখর করতেই সার্বিক আয়োজন। তবে রেজিস্ট্রার্ড শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কোনো অতিথি অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে জানান তিনি।