একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক, গবেষক, অধ্যাপক ড. গোলাম মুরশিদ মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা (লন্ডন সময় বেলা ১১ টায়) লন্ডনের কুইন্স হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আভিধানিক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. স্বরোচিষ সরকার তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ড. স্বরোচিষ সরকার জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন ড. গোলাম মুরশিদ। ২২ আগস্ট বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে লন্ডনের সাউথএন্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে কুইন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গোলাম মুরশিদ।
ড. গোলাম মুরশিদ ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ এপ্রিল বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। তার প্রথম কর্মজীবন ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় দুই দশক তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। এমনকি ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) সংবাদপাঠক এবং উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ও গবেষণায় জড়িত ছিলেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্ট্যাডিজের গবেষণা-সহযোগী ছিলেন। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে লন্ডনে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। অবসর জীবনে তিনি লন্ডনেই বসবাস করতেন।
গোলাম মুরশিদ বাংলা সাহিত্য, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সমাজ নিয়ে বেশকিছু সুপরিচিত গ্রন্থ রচনা করেছেন। নারী অধ্যয়ন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং বাংলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ৩০টিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
সৃজনশীল ও গবেষণামূলক কাজের জন্য একাধিক পুরস্কার লাভ করেছেন। প্রবন্ধ-গবেষণায় তিনি ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে একুশে পদকে ভূষিত হন। এ ছাড়াও তিনি প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার (১৪১২) এবং আনন্দ পুরস্কার (১৪৩০ বঙ্গাব্দ) লাভ করেছেন।