এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সাম্প্রতিক বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রবীন এই শিক্ষক নেতা গতকাল শুক্রবার বলেন, এ দেশে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে গভীর জ্ঞান না থাকার ফলেই ওমন মন্তব্য করতে পেরেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রবীণ এই শিক্ষক নেতা বলেন, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে সরকারই বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছে। সেখানে বিসিএস প্রশাসন ও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা নিবন্ধন পরীক্ষা পরিচালনা করে সনদ দিয়ে আসছেন। সেই সনদের কোনো মূল্য তাহলে বর্তমান মন্ত্রীর কাছে নেই? বর্তমান যুগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ছাড়া কেউ শিক্ষক পদে আবেদনই করতে পারেন না। তারপর এনটিআরসিএর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। সুতরাং নিয়োগ সম্পর্কে মন্ত্রী ভালোভাবে না জেনে কথা বলেছেন যা অত্যন্ত আপত্তিকর। মন্ত্রী ঢালাওভাবে এ কথা বলতে পারেন না। তবে হ্যাঁ, অনেক বছর আগে যখন বেসরকারি শিক্ষকতা পেশায় অনেকেই আসতে চাইতেন না, তখন নিয়োগ নীতিমালাও শিথিল ছিলো, সেই সুযোগে অনেকে চাইলেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়তে পারতেন। সেই সময়ে নিয়োগ পাওয়াদের বেশিরভাগই অবসরে গেছেন বা যাওয়ার পথে।
একইসঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষকদের পরামর্শ দিয়ে মাজহারুল হান্নান বলেন, আন্দোলনের গাম্ভীয রক্ষায় শিক্ষক-কর্মচারীদের নাচ-গান বন্ধ করা উচিত। শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে শিক্ষকদের রাজপথে দিনের পর দিন অবস্থান করা খুবই কষ্টকর ও অপমানজনক। তাই এখানে নাচ-গান করলে আন্দোলনের ওজন কমে যাবে সে দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত, আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী তাদের ক্লাসে ফিরে যেতেন বলেন। কিন্তু, শিক্ষকরা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়া অবধি রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। গত বুধবার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে যোগ্যতার ভিত্তিতে। কলেজ শিক্ষক (শিক্ষা ক্যাডার) নিয়োগ হচ্ছে যোগ্যতার ভিত্তিতে। যে কলেজ শিক্ষক হতে পারছেন না বা সরকারি স্কুলের শিক্ষক হতে পারছে না সে বেসরকারি স্কুল বা কলেজের (এমপিওভুক্ত) শিক্ষক হচ্ছে, ননএমপিওতে হচ্ছে।’
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।