দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: একটানা প্রায় একমাস চলছে তাপদাহ। আর অন্য সময়ের তুলনায় গরমে আমাদের ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দেয়। গ্রীষ্মকালে ছোট-বড় সব বয়সীদের মাঝে ঘামাচি হয়ে থাকে। অন্যদিকে রোদে বের হলেই অনেকেই সানবার্ন হয়। যাদের ত্বক বেশি সেনসেটিভ তাদের এই সময়ে ব্রণ হয়ে থাকে। অন্যদিকে অতিরিক্ত ঘাম এবং দুর্গন্ধ নিয়ে অনেকে বিপাকে পড়েন। গরমের ত্বকের এই সব সমস্যা নিয়ে একটি সংবাদপত্রে কথা বলেছেন চর্ম, যৌন, অ্যালার্জি, লেজার অ্যান্ড হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন এবং ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. মো. কামরুল হাসান চৌধুরী।
অ্যালার্জি
গরমের সময়ে অনেকের অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় বেড়ে যায়। মূলত বাতাসে ধুলাবালি, ফুলের রেণু প্রভৃতির কারণে এমন হয়। অনেকের দেখা যায় ত্বক ফুলে ওঠে, লালচে হয়ে যায়, চুলকায়। আবার কারও কারও চামড়া শুকনো খসখসে হয়ে যায়। অ্যাকজিমার মতো জটিলতা হয়। যাদের ত্বক অ্যালার্জিপ্রবণ, তারা এ সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবেন। বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরে নেবেন। ঘরবাড়ি ঝাড়ু দেওয়ার সময় নাক-মুখ ঢেকে নেবেন। অ্যালার্জি উদ্রেককারী খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খেতে পারেন।
ঘাম থেকে দুর্গন্ধ
গরমের সময়ে দেখা যায় অনেকেই একটুতেই ঘেমে যাচ্ছেন। দেহের অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি থেকে যে ঘাম উৎপন্ন হয়, সেই ঘামে দুর্গন্ধ হয়। ঘামের কিন্তু নিজস্ব কোনো গন্ধ নেই। মূলত ঘামে একধরনের ব্যাকটেরিয়ার উৎপত্তি হয় যা থেকেই দুর্গন্ধ হয়। এ ছাড়া বগলসহ শরীরের বিভিন্ন অবাঞ্ছিত লোমও এই দুর্গন্ধের জন্য দায়ী। ঘামের দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পেটে হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। পাতলা-ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। যতটা সম্ভব রোদ বা গরম আবহাওয়া এড়িয়ে চলা জরুরি। ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঘামাচি
গরমের সময়ে অনেকের ঘামাচি হয়। বিশেষ করে শিশুদের ঘামাচি বেশ ভুগায়।শরীর ঘেমে ঘামগ্রন্থির নালি বন্ধ হয়ে গেলে ঘামের বিভিন্ন উপাদান ঠিকমতো বের হতে পারে না। এই উপাদানগুলোই ত্বকের বিভিন্ন স্তরে জমা হয়ে তৈরি করে ঘামাচি। গরমে ঘামাচি প্রতিরোধ করতে সবসময় পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। দিনের বেশিরভাগ সময় ঠান্ডা বাতাসে থাকার চেষ্টা করবের। সম্ভব হলে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকতে পারেন। বরফের সেঁক বা গোসলে নিমপাতার ব্যবহার বেশ ভালো কাজ দেয়। ক্যালামিন লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘামাচির সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন।
সানবার্ন
রোদে গেলে অনেকের সানবার্ন হয়ে থাকে। মূলত প্রখর রোদে সূর্যরশ্মির কারণে সানবার্ন হয়। ত্বকে কালো বা লালচে দাগ দেখা দেয়। সাধারণত শিশু এবং যাদের গায়ের রং বেশি ফরসা, তাদের সানবার্নের সমস্যা বেশি হয়। সানবার্ন থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হওয়ার আগে টুপি, সানগ্লাস ব্যবহার করার অভ্যাস করলেও সমাধান মিলবে। আর গরমে পানি খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে।
ত্বকের অন্যতম একটি সমস্যার নাম ব্রণ। আর গরমে ব্রণের মাত্রা বেড়ে যায়। যাদের ত্বক তৈলাক্ত ধরনের, তারা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন। ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে বারবার ভালো করে মুখ ধুতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবেই যেন ত্বকে তেল-ময়লা না থাকে।