জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় খাবার ও পানি ফুরিয়ে আসছে। এ অবস্থায় সেখানকার পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত ভয়াবহ।
জাতিসংঘের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, গাজায় ৫০ হাজার গর্ভবতী মহিলা তাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। এমনকি বিশুদ্ধ পানির সুযোগও মিলছে না। খবর-বিবিসি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গত এক সপ্তাহে গাজায় ১১ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। টানা এক সপ্তাহের বোমাবর্ষণ ও অপরিহার্য জিনিসপত্রের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় গাজার মানবিক সংকট ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। এরই মধ্যে লাখ লাখ মানুষ বিপন্ন হয়ে পড়েছেন।
রেড ক্রস সতর্ক করে বলেছে, জ্বালানি সংকটের কারণে মর্গ বা মৃতদেহ রাখার স্থানে পরিণত হয়ে উঠতে পারে হাসপাতালগুলো। পর্যাপ্ত ওষুধ ও সরঞ্জামের অভাবে অনেকেই চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় অবরোধ চলবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত হামাস তাদের মুক্তি না দেবে ততক্ষণ কোনো বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করা হবে না, পানির লাইন বন্ধ থাকবে, জ্বালানি ট্রাক ঢুকবে না। গাজার একমাত্র পাওয়ার স্টেশনটির জ্বালানি বুধবার শেষ হয়ে গেছে। এই অঞ্চলটি এখন জেনারেটরের ওপর নির্ভর করছে।
জাতিসংঘ বলেছে, ইসরায়েলের বিরামহীন বোমা হামলায় গাজায় ৩ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সাড়ে ছয় লাখ মানুষ পানি, জ্বালানি ও ওষুধের চরম সংকটে রয়েছেন।
গাজার গণপূর্ত ও আবাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসিএইচএ জানায়, বোমা হামলায় উপত্যকার কমপক্ষে ২ হাজার ৫৪০টি আবাসন ইউনিট পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আরও ২২ হাজার ৮৫০টি আবাসন ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে শনিবার ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা চালায় ইসরায়েলে। ওই হামলার সময় গাজায় কমপক্ষে ১৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল বলে পশ্চিমা গণমাধ্যমে বলা হয়। সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১৩০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের পাল্টা বিমান হামলায় গাজায় দেড় হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজা বাস্তুচ্যুত হয়েছে তিন লাখ ৩৮ হাজার মানুষ।