জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভর্তি পরীক্ষার ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের পাঠদান শুরু করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধসহ বিলম্বিত ভর্তি কার্যক্রমের ফাঁদে আটকা পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এর দরুন এখনও ক্লাসের মুখ দেখেনি নতুন শিক্ষার্থীরা।
বছর শুরুর প্রথম দিন থেকেই বেশ কয়েক বছর ধরেই জবির বিভাগগুলোতে ক্লাস শুরু হয়। গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার কারণে গত বছরও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের পাঠদান প্রায় আড়াই মাস দেরিতে শুরু হয়েছিল। এ বছরেও ভর্তি পরীক্ষার দীর্ঘদিন পরও পাঠদান শুরু করতে না পারায় সেশনজটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
এর আগে গত বছর ৩০ জুলাই থেকে ২০ আগস্ট ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০২১-২২ সেশনের বিভিন্ন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একই বছরের ৪ নভেম্বর প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পর ৭ নভেম্বর শুরু হয় শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম। এখন পর্যন্ত ৭ম মেধাতালিকা প্রকাশ করেও আসন পূর্ণ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা বলছেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলমান হওয়ায় ক্লাস শুরু হতে দেরি হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের শঙ্কা ও অতীতের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একই সেশনের প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস শেষ হয়ে পরীক্ষাও শুরু হয়ে গেছে। এদিকে আমরা এখনও ক্লাসের মুখই দেখতে পেলাম না। একই সেশনের এমন বৈষম্য আমাদের স্পষ্টত সেশনজটের শঙ্কায় ফেলছে।
এদিকে ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের সহযোগী পরিচালক ড. মো. জুলফিকার মাহমুদ জানান, সপ্তম মেধাতালিকা থেকে ভর্তির পর মোট ২ হাজার ৭৬৫টি আসনের বিপরীতে এখনও ৩৫৩টি আসন খালি আছে। আমরা এই মাসের মধ্যেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ করার চেষ্টা করছি।’
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘গুচ্ছ পদ্ধতিতে ধীরগতির কারণে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হতে দেরি হচ্ছে। এখন গুচ্ছ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে দ্রুত ক্লাস শুরুর কথা বলেছি।’
শিক্ষার্থী ভর্তির ধীরগতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘গুচ্ছের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুবিধা করতে গিয়ে আমরাই অসুবিধায় পড়েছি। এক শিক্ষার্থী একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকায় ভর্তি কার্যক্রম শেষ হতে সময় লাগছে। তবে একটু দেরিতে ক্লাস শুরু হলেও সেশনজট হবে না বলে আশা করছি। জানুয়ারির ২২ তারিখ থেকেই আমরা ক্লাস শুরুর চিন্তাভাবনা করছি। এর আগেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ হবে।’