সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দিকে গুলি ছুড়তে পুলিশকে প্ররোচিত করার অভিযোগ উঠেছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা মো. রাফিউল হাসানের (রাসেল) বিরুদ্ধে। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ১৬ জুলাই ঘটনার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সেদিন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা রংপুর শহর হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং গেটে অবস্থান নিলে সেখানে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এতে একপর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আবু সাঈদ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন বলে অভিযোগ আছে।
এ ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এই কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন তারা।
এদিকে পুলিশ-ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে বেরোবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে দেখা যায়। তাদের সেই সময়কার ছবি বিভিন্ন ভিডিওতেজুড়ে দিয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ রয়েছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তাবিউর রহমান প্রধানের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সেকশন অফিসার মো. রাফিউল হাসানের কাছে পুলিশকে গুলি চালাতে বলেছেন কি না বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি গুলি চালাতে বলিনি।
সংঘর্ষের সময় হেলমেট পরিহিত স্টিল ছবির ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ বলেন, প্রক্টর স্যারের অনুরোধে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সংঘর্ষ চলাকালীন চারদিক থেকে ইটপাটকেল টিয়ারশেলসহ অন্যান্য বিপদজনক জিনিসপত্র আসতে থাকে। তখন নিজের নিরাপত্তার জন্য আমার বাইকে থাকা হেলমেটটি পরি। তারপর সেখানে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অনেক শিক্ষার্থী, সাংবাদিককে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে পাঠাতে সাহায্য করি।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। নিহত আবু সাঈদের বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায়। আবু সাঈদ ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়টির কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।