মাদারীপুরে কাস্টমস ও ভ্যাটের দুই কর্মকর্তার ঘুষের টাকা ভাগাভাগির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেই ভাইরাল অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ডরিলিজ করেছে খুলনার ভ্যাট কমিশন। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন।
জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর বিকেলে ১০ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, কাস্টমস্ ও এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ মাদারীপুর সার্কেল অফিসের রাজস্ব কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও ইমরান কবীর অফিস কক্ষে বসে ঘুষের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কষাকষি করছিলেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। পরে ২ জানুয়ারি বিকেলে খুলনার ভ্যাট কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সফিউজ্জামান অভিযুক্তদের স্ট্যান্ডরিলিজ প্রদান করেন।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে মাদারীপুর সার্কেল অফিসকে পত্রটি দেয়া হলে তারা খুলনায় চলে যান। অভিযুক্ত দুইজনকেই খুলনা অফিসে ক্লোজড চিঠিতে সংযুক্ত করে অফিসিয়াল তদন্ত করবে ভ্যাট কমিশন।
ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম লিখন বলেন, ১০০ টাকার নোট দিলে প্রথমে প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরে ৫০০ টাকার কয়েকটি নোট দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পকেটে নিয়ে নেন রফিকুল ইসলাম। আর পাশে বসে ছিলেন ইমরান কবীর। দুই রাজস্ব কর্মকর্তা ঘুষের টাকার জন্য দামাদামি করেছেন। এমন কি চাহিদামতো প্রতি মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আরও দুই হাজার টাকা মাসোহারা চাইছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। পরে আমি ও আমার বন্ধু অমিত হোসেন গণমাধ্যমে বিয়ষটি জানিয়ে দেই। এতেও বিভিন্ন মহল থেকে আমাদের ওপর চাপ এসেছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে ওই ব্যবসায়ী বলেন, আমার একটি ছোট পোশাকের দোকান আছে পুরান বাজারে। আমাকে ভ্যাট অফিসে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভ্যাট দিতে বলেন ভ্যাট অফিসের অফিসাররা। পরে অফিসে গেলে তারা আমাকে শর্ত অনুযায়ী এক হাজার টাকায় ভ্যাট দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু শর্ত হলো, প্রতি মাসে তাদের অফিসে তিন হাজার টাকা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শুনেছি, তাদের বদলি হয়েছে। এতে তো দোষীর কোনো বিচার হলো না। বরং মাদারীপুর জেলার চেয়ে বড় জেলা খুলনায় বদলি হলো। সেখানে রেখে তাদের তদন্ত হলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত করলে আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা লাভবান হবো। স্ট্যান্ডরিলিজ কোনো সমাধান হতে পারে না, দোষীরা বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।
কাস্টমস্ ও এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ মাদারীপুর সার্কেল অফিসের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও ডেপুটি কমিশনার মো. এনামুল হককে মঙ্গলবার দুপুরে তার অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে একাধিকার ফোন করলেও রিসিভ করেননি।