চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) স্থানীয়দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ৩ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। রাত নয়টা পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষে দুপক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। স্থানীয়রা দুই নাম্বার গেট আটকে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী ও এক শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় সাপ্তাহিক বাজারের দিন ছিল। অন্যদিনের তুলনায় মঙ্গলবার ওই এলাকায় ভিড় বেশি হয়ে থাকে ৷ বিকেল পাঁচটার দিকে ওই বাজারে ইফতার কিনতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মচারী বখতিয়ার উদ্দিন। এ সময় তার মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে বখতিয়ারের সঙ্গে ওই ছাত্রের কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগ কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের জামিন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে বখতিয়ারের সঙ্গে জামিনেরও কথা-কাটাকাটি হয় এবং ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী ও বখতিয়ারের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।
বখতিয়ার স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। হাতাহাতির এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক কর্মচারী ও হাটহাজারী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে এলে আবারও সংঘর্ষ বাধে।
পরে বখতিয়ার ও মিজানুরের অনুসারীরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের ওই কর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ খবর জানাজানি হওয়ার পর বিজয় গ্রুপের অনুসারী ঘটনাস্থলে আসেন এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। রাত নয়টা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ। এ সময় দুপক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। স্থানীয়রা দুই নাম্বার গেট আটকে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই ছাত্রলীগ নামধারী বখাটেরা আমাকে মারধর করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করেছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী জামিন আহমেদ বলেন, ‘তারা আমাদের ওপর হঠাৎ হামলা চালায়। এতে তিন ছাত্র আহত হয়েছে। সিনিয়রদের জানালে তারা এ হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করেছেন।’
বিজয় গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়রা হামলা চালিয়েছেন। আমরা বিষয়টা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
এ দিকে সংঘর্ষের এ ঘটনার পর রাত সাড়ে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির কার্যালয়ে হওয়া এ বৈঠকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি ও উপ-উপাচার্য ( প্রশাসন) উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, ‘সংঘর্ষ পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। সংঘর্ষের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আমরা বৈঠকে বসেছি। বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া জানানো হবে।’