চাঁদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা, তথ্য দুদকের হাতে - দৈনিকশিক্ষা

চাঁদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা, তথ্য দুদকের হাতে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

চাঁদপুরের ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জমি অধিগ্রহণে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। কমিশন অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকারকে নিয়োগ দেয়। সংস্থাটির তথ্য বলছে, চাঁদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে সরকারি অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ-সংক্রান্ত অনেক নথিপত্র এরই মধ্যে দুদকে চলে এসেছে। এখন এসব নথি যাচাই চলছে। দুদক থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, সেলিম খান আওয়ামী লীগের একজন স্থানীয় নেতা। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে তিনি পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে শত শত কোটি টাকার মালিক হন। আর এ বালু উত্তোলনের কারণে চাঁদপুরের অনেকাংশে ভাঙনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জমি অধিগ্রহণে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় কিছু নেতাকর্মী নিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলে ঘুষ-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, জায়গা দখলসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিকানা অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের তথ্য বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের নামে সরকারি অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগটি পাওয়ার পরই তা অনুসন্ধান করতে মাঠে নামে দুদক। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ-সংক্রান্ত নথিপত্র চেয়ে নোটিশ পাঠান। ওই নোটিশ পেয়ে বিভিন্ন দপ্তর থেকে এ-সংক্রান্ত তথ্য দুদকে পাঠানো হয়েছে।

দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম খানের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জমি অধিগ্রহণে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য চেয়ে কয়েকটি দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি। আরও কিছু তথ্য পাওয়া বাকি আছে। যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা যাচাই চলছে। 

দুদকের তথ্যমতে, চাঁদপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত জমির বিস্তারিত তুলে ধরে ভূমি মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। ওই প্রতিবেদন দুদকের টেবিলে রয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার ১১৫ নম্বর লক্ষ্মীপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নির্ধারিত বাজারমূল্য অনুযায়ী নাল ১৩ হাজার ৮০২ টাকা, বাড়ি-বাগান ৩৮ হাজার ৯৫৬ টাকা, পুকুর-ডোবা ২৩ হাজার ৯৬৬ টাকা ও ভিটি শ্রেণির মূল্য ৩৩ হাজার ২৯৪ টাকা ধরে প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় দাঁড়ায় ১৯৩ কোটি ৯০ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৭ টাকা। কিন্তু চাঁদপুরের ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ অন্যরা ভূমি অধিগ্রহণের আগেই সেখানকার সাড়ে ৬২ একর জমি মৌজা দরের চেয়ে ২০ গুণ বেশি দাম দেখিয়ে দলিল করে নিয়ে যায়। এসব জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের ৩৫৯ কোটি ১৬ লাখ ৬১ হাজার ৭৮২ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।

দুদকের তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের নামে সরকারি অর্থ লোপাটের অভিযোগ পেয়ে গত বছরের ৬ এপ্রিল দুদক সেলিম খানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সা’দাৎ-এর নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্টের একটি টিম এ অভিযান চালায়। অভিযানকালে দুদক টিম চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মৌজায় চাঁদপুর-হাইমচর সড়কের পাশে মেঘনা নদী থেকে ৮০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে এবং বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে।

ওই অভিযানের বিষয়ে গত বছরের ২১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে সরকার নির্ধারিত মৌজা মূল্যের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি মূল্য দেখিয়ে ১৩৯টি উচ্চমূল্যের দলিল কারসাজির মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সেটা আর হয়নি। যদি তিনি সফল হতেন, তাহলে সরকারের অতিরিক্ত ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা লোকসান হতো। তার বিরুদ্ধে মেঘনা-পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ আছে। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযোগের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে এবং টিম এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দুদকে দাখিল করেছে।

দুদকের তথ্যমতে, সম্পদের তথ্য গোপনসহ ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার। গত বছরের ১ আগস্ট মামলাটি করা হয়।

পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে - dainik shiksha শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী - dainik shiksha মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের - dainik shiksha অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.010395050048828