নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠে আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার ‘লুনা ২৫’ নভোযান। প্রায় অর্ধ শতাব্দির মধ্যে চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমানোয় দেশটির প্রথম উদ্যোগ ছিল এটি।
১৯ থেকে ২১ অগাস্টের মধ্যে নভোযানটির চাঁদে অবতরণ করার কথা থাকলেও অবতরণের আগে গতিপথ বদলাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ার কথা জানিয়েছিল রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা কর্তৃপক্ষ রসকসমস। পরে নভোযানটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার খবর দিয়েছে সংস্থাটি।
“অপ্রত্যাশিত কক্ষপথে চলে যাওয়ার পর চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে এটি ধ্বংস হয়ে গেছে” – এক বিবৃতিতে বলেছে রসকসমস।
মর্যাদাপূর্ণ এই অভিযানে রাশিয়ার ব্যর্থতা কার্যত “মহাকাশ অভিযানে এই পরাশক্তির ক্ষয়িষ্ণু বাস্তবতার দিকেই নির্দেশ করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স। “বিশেষ করে যে দেশটি প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক ও প্রথম মানব নভোচারি ইউরি গ্যাগারিনকে মহাকাশে পাঠিয়েছিল।”
১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে লুনা ২৪ মিশনের পর রাশিয়া গত প্রায় পাঁচ দশকে আর চন্দ্রাভিযানের উদ্যোগ নেয়নি।
রাশিয়া প্রথমবার এই অভিযানে কারিগরি সমস্যার কথা বলার পরপরই নভোযানটির ভাগ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন ‘রাশিয়ানস্পেসওয়েব ডটকম’-এর সংবাদকর্মী আনাতোলি জাক।
“রাশিয়ার ইন্টারনেট এখন ব্যর্থতার চিত্রে ভরে গেছে। অনেকেই বলছেন নভোযানটি হারিয়ে গেছে। কারণ, বড় কোনো সমস্যা না হলে রসকসমস এ নিয়ে কথাই বলত না।” – এক্স-এ দেওয়া পোস্টে লেখেন তিনি।
নভোযান ধ্বংস হওয়ার এই ঘটনা রাশিয়ার মহাকাশ প্রকল্পে বড় এক ধাক্কা। কারণ, সোভিয়েত যুগের পর রাশিয়া থেকে পরিচালিত প্রথম চন্দ্রাভিযান ছিল এটি।
১০ অগাস্ট উৎক্ষেপিত লুনা ২৫ চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছায় ছয় দিন পর। আর সোমবার নাগাদ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি অবতরণের কথা ছিল এর।
এই নভোযানে ছিল আটটি ভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্র। পরিকল্পনা অনুসারে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বরফ পানির খোঁজসহ বিভিন্ন পরীক্ষা চালানোর কথা ছিল এর। চাঁদের ওই এলাকায় এখন পর্যন্ত কোনো ‘রোভার বা ল্যান্ডার’ অবতরণ করতে পারেনি।