চাকরির বাজারে অবহেলার নাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় - দৈনিকশিক্ষা

চাকরির বাজারে অবহেলার নাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান নিয়ে প্রায়ই পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় চলতে থাকে তার আপন মহিমায়। যেন দেখার, ভাবার কিংবা পরিবর্তনের কেউ নেই। যেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর পেছনে বার্ষিক ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১৫১ টাকা, সেখানে ইউজিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর বছরে মাথাপিছু ব্যয় ২ লাখ ১২ হাজার টাকা এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীপিছু সরকারের বার্ষিক ব্যয় ১ লাখ ৯২ হাজার টাকার বেশি। শুধু বাজেটেই নয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অবহেলিত আর উপেক্ষিত চাকরির বাজারেও। শনিবার (৫ আগস্ট) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, পরীক্ষকরা সিভিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেখে শুরুতেই ধারণা করেন, এই প্রার্থী ততটা মেধাবী আর অভিজ্ঞ নয়। তাদের ধারণা একেবারে ভুলও নয়। কারণ চাকরির বাজারে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হয় সফ্ট স্কিলকে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পায় কমিউনিকেশন আর প্রেজেন্টেশন স্কিল। যেখানে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি সেমিস্টারে ২টি আর ৪ বছর মেয়াদি অনার্স শেষ করতে ১৬টি প্রেজেন্টেশন দিতে হয়, সেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত একবারও প্রেজেন্টেশন দিতে হয় না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে প্রতি সেমিস্টার শেষে অন্তত একটি করে ৪ বছরে মোট ৮টি ভাইভা দিতে হয়, সেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইভা দিতে হয় মাত্র একটি। তাও আবার নামমাত্র, অনেকটা নিয়ম রক্ষার্থে বাধ্য হয়ে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি অভিজ্ঞতার জন্য গ্রাজুয়েশন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা থাকে। তাছাড়া ফিল্ড ভিজিট, বিজনেস কোর্স কম্পিটিশন, রিসার্চ, এসাইনমেন্ট ইত্যাদির মতো কার্যক্রম চলতে থাকে সবসময়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এর কোনো ছিটেফোঁটাও নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু মুখস্থ প্রশ্ন-উত্তর পড়া নিয়ে ব্যস্ত। এবার শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি প্রসঙ্গে বলতে চাই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনলে প্রথমে মাথায় আসে-‘ওহ! ওখানে তো ক্লাস করা লাগে না।’ আসলেও তা-ই। ইনকোর্স পরীক্ষায় ক্লাসে উপস্থিতিতে ৫ নম্বর নির্ধারিত থাকলেও খুব একটা কার্যকর হয় না সেটিও। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর অনার্স থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত শিক্ষাজীবন কাটে শুধু ওই ইনকোর্স আর ফাইনাল পরীক্ষায় উপস্থিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। যদিও বা কোনো ভালো শিক্ষার্থী ক্লাস করতে যায়, গিয়ে দেখে হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র শিক্ষার্থী ক্লাসে এসেছে। তাই শিক্ষকও সেভাবে পড়াতে আগ্রহবোধ করেন না। ফলে সময় কাটে মোটিভেশন দিয়ে আর গল্পে গল্পে। এভাবে যখন কেটে যায় গোটা একটি শিক্ষাবর্ষ, রুটিন প্রকাশ হয় নির্বাচনি পরীক্ষার। এ পরীক্ষা যেন রহস্যের আরেক নাম। প্রশ্নপত্র দেওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের সাদা খাতায় শুধু নাম-রোল লিখে জমা দেওয়ার পালা। কিছুক্ষণ পর থেকে শিক্ষকরাও যেন ইশারা-ইঙ্গিতে বলতে থাকেন, ‘খাতা জমা দাও’।

পরীক্ষা দেওয়ার পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থী যখন দেখতে পায় অন্য সবাই খাতা জমা দিয়ে চলে যাচ্ছে, তখন তার মানসিকতার পরিবর্তন কি স্বাভাবিক নয়? তাহলে দায় কার? দায় কর্তৃপক্ষের। কারণ শিক্ষার্থীরা নিশ্চিতভাবেই জানে, তাদের নির্বাচনি পরীক্ষার খাতা দেখাও হবে না, মূল্যায়নও হবে না। তাহলে পরীক্ষা দিয়ে কী লাভ? দেশের তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশ যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চায়, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শেষে তরুণরা যেন চাকরির বাজারে অন্ধকারে হারিয়ে না যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে এটুকুই প্রত্যাশা করি।

লেখক : মেহেদী হাসান নাঈম, শিক্ষার্থী

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ - dainik shiksha চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ ঢামেকে একজনের মৃত্যু - dainik shiksha ঢামেকে একজনের মৃত্যু জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ - dainik shiksha জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ - dainik shiksha বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর - dainik shiksha শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের - dainik shiksha সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো - dainik shiksha যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054910182952881