চারটি পাবলিক পরীক্ষা পেছানো ও সিলেবাস ছোট করার চিন্তা - দৈনিকশিক্ষা

চারটি পাবলিক পরীক্ষা পেছানো ও সিলেবাস ছোট করার চিন্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে ডিসেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করার একটি চিন্তা আছে। এছাড়া শিক্ষাবর্ষ দুই মাস বাড়িয়ে আগামীবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেনে নেয়ারও চিন্তা আছে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের শীর্ষপর্যায়ের বেশির ভাগ কর্মকর্তা যেটাতে মত দেবেন সেটাই বাস্তবায়ন হবে। এসবকিছু নিয়ে এখনও চিন্তাভাবনা চলছে, কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

দেখা যাচ্ছে, করোনার কারণে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে পাঁচটি পাবলিক পরীক্ষা। এগুলো হচ্ছে- নভেম্বরে নির্ধারিত পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী বা পিইসিই ও জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষা এবং চলতি বছরের এইচএসসি ও আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। এসব পরীক্ষার মধ্যে পিইসি ও জেএসসি পিছিয়ে ডিসেম্বরে নেয়ার চিন্তা চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ১৫ দিন পর নেয়া হবে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা। আর আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও পেছানোর চিন্তা চলছে। ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হয়ে থাকে।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ৩১ মে বলেছিলেন, করোনার কারণে কতদিন ক্লাস বন্ধ থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে যখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে, তখন ক্ষতি কিভাবে পোষানো যায় সে চেষ্টা আমাদের থাকবে। শিক্ষাবর্ষ বাড়ানো সম্ভব কিনা এগুলোও আমাদের বিবেচনায় আছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দুই সপ্তাহের সময় দিয়ে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা দুর্যোগে পৌনে ৩ মাস ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও এর মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটি, রমজান, ঈদ, গ্রীষ্মের ছুটিসহ দেড়মাসের মতো ছুটি ছিলো। সেই হিসেবে করোনার ছুটি একমাসের কিছু বেশি। কিন্ত শিক্ষাবিদদদের অনেকে এমন হিসেব কষতে নারাজ। তারা আশঙ্কা করছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আরও তিনমাসেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচলের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সবমিলে ৫ থেকে ৬ মাস ধরেই বন্ধ থাকছে শ্রেণি কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিয়ে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসের কী হবে আর পরবর্তী শ্রেণিতে পদোন্নতির মূল্যায়ন বা অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা নেয়া হবে কীভাবে।

জানা যায়,  জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে শিক্ষাবর্ষ দু’মাস বাড়িয়ে সিলেবাস শেষ করে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সেটি অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতি বছরের পাঠ্যবইয়ের ওপর পাঠদান করতে বলা হয়েছে।

তবে এই প্রস্তাবে সায় নেই বেশির ভাগ কর্মকর্তার। তারা প্রস্তাবটিকে অবিবেচনাপ্রসূত বলেও মনে করেন। কেননা শিক্ষার্থীরা বাসায় থেকে এমনিতে একটি ‘ট্রমা’র (মানসিক আঘাত) মধ্যে আছেন। এর মধ্যে নতুন বছরেও পুরনো ক্লাসে রেখে দিলে শিক্ষার্থীদের জন্য তা বড় ধরনের আঘাত হতে পারে। তাই তারা সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে সীমিত আকারে মূল্যায়ন বা পরীক্ষার ব্যবস্থা করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক সাংবাদিকদের বলেন, করোনার ছুটির ক্ষতি পোষাতে একাধিক বিকল্প প্রস্তাব আছে। এর মধ্যে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার প্রস্তাব একটি, আরেকটি শিক্ষাবর্ষ ডিসেম্বরের পরও দু’মাস বৃদ্ধি করা। সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার ক্ষেত্রে অন্যান্য শ্রেণিতে যত সহজ অষ্টম শ্রেণির ক্ষেত্রে ততটা নয়। কেননা এই শ্রেণির লেখাপড়ার কিছু অংশ নবম শ্রেণির সঙ্গে সেতুবন্ধ আছে। সেটা পড়াতেই হবে। তাই এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সিলেবাস শেষ করে প্রয়োজনে নভেম্বরের পরিবর্তে ডিসেম্বরে পরীক্ষা নিতে হবে। আমাদের দেশে মূল্যায়নের একমাত্র পথ হল পরীক্ষা। তাই এটা বাতিলের সুযোগ কম। তবে যে পথেই আমরা যাই না কেন, ঐচ্ছিক ছুটিতে একটা সমন্বয় করতে হবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে লেখাপড়ায় বেশ ক্ষতি হয়ে গেছে। অন্যান্য শ্রেণির ক্ষেত্রে আমরা যতটুকু পড়ালাম ততটুকুর মধ্যে মূল্যায়ন করা যেতে পারে। কিন্তু জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসির ক্ষেত্রে সেই সুযোগটা নেই। এই তিনটি পরীক্ষাই হয়তো পেছানো লাগতে পারে।

শিক্ষকরা জানান  বর্তমান ছুটিতে ইতোমধ্যে দশম শ্রেণির প্রি-টেস্ট পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। অক্টোবরে নির্ধারিত আছে টেস্ট পরীক্ষা। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এখন পর্যন্ত দ্বাদশ শ্রেণিতে তোলা যায়নি। অথচ এরা আগামী বছরে এইচএসসি পরীক্ষার্থী। ফলে আগামী বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বেলায় সবচেয়ে বেশি তালগোল পেকে আছে। এছাড়া নভেম্বরে নির্ধারিত পিইসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়াও বন্ধ আছে। এটিও পিছিয়ে ডিসেম্বরে নেয়ার চিন্তা চলছে।

মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039939880371094